চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে হাবিল আলী নামে এক বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছেন। আহতের স্বজনের দাবি, শনিবার ভোরে সীমান্তসংলগ্ন জমিতে পানি দেওয়ার সময় হাবিল গুলিবিদ্ধ হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কৃষক হাবিল বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় শাহবাজপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য কাসেদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, গুলিবিদ্ধ হাবিল আলীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর পিঠের ডানপাশে গুলি লেগেছে। গুলিটি এখনও বের করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওয়ার্ড সদস্য কাসেদ আলী বলেন, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কৃষক হাবিল গম ক্ষেতে পানি দিতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয়রা ৪/৫ রাউন্ড গুলির শব্দ পেয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজিবির নির্দেশনা আছে, সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে সকাল পর্যন্ত কেউ যেন সীমান্তে না যান। তবু কেন হাবিল সীমান্তে গেলেন, তা জানি না।
আহতের পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, সীমান্তে গুলির ঘটনায় বিজিবি পতাকা বৈঠকে প্রতিবাদ জানাতে গেলে আহত ব্যক্তি একজন চোরাকারবারি বলে জানিয়েছে বিএসএফ। গুলি ছুড়েছে বিএসএফের ১১৯ গোপালনগর ক্যাম্পের সদস্যরা। হাবিল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের তেলকুপি লম্বাপাড়া গ্রামের মৃত বেলাল হোসেনের ছেলে।
হাবিলের স্ত্রী তাসলিমা বেগম জানান, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁর স্বামী সীমান্ত এলাকায় থাকা গম ক্ষেতে পানি দিতে গেলে তাঁকে গুলি করে বিএসএফ সদস্যরা। তিনি এ ঘটনায় বিচার দাবি করেন। আহতের ভাই জামাল আলীর দাবি, তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে চোরাচালান বা এ-সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ নেই।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, প্রায় ২০ বছর আগে হাবিলের ভাই আলম আলী চোরাচালান করতে গিয়ে একই সীমান্তে মারা গেছেন। গতকালের ঘটনায় হাবিলের আরও এক সহযোগী আহত হয়েছেন। তবে তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে আহত ব্যক্তিসহ ছয়-সাতজনের একটি চোরাকারবারি দল সীমান্ত পিলার ১৮০-এর পাশ দিয়ে চোরাচালানের উদ্দেশ্যে ভারতে অনুপ্রবেশ করলে গুলি করে বিএসএফ। এ নিয়ে শনিবার দুপুরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। তবে বিএসএফের পক্ষ থেকে চোরাচালান ও সীমান্তে রাতের বেলা জনসাধারণের আসা বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।