সাবেক সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহর মৃত্যুতে সেনাবাহিনীর শোক

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। রবিবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। একইসঙ্গে তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।

এর আগে, সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহ বীর উত্তম হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২ জানুয়ারি থেকে সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।

তিনি ২ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহ ১৯৫৫ সালে ১২তম পিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সাথে পাঞ্জাব রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সেক্টর-৩ এর সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার অধীনস্ত ‘এস ফোর্স’ মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ বাহিনীর তিনটি নিয়মিত ব্রিগেডের একটি ব্রিগেড হিসেবে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে অংশগ্রহণ করে। তার মধ্যে বিলোনিয়ার ১ম যুদ্ধ ও ২য় বা চূড়ান্ত যুদ্ধ, আখাউড়ার যুদ্ধ, কিশোরগঞ্জ সদর আক্রমণ, নরসিংদী দখলের যুদ্ধ এবং ভৈরব-আশুগঞ্জের যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য। তিনি ৭ এপ্রিল ১৯৭২ থেকে ২৪ আগস্ট ১৯৭৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রথম সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মরহুম মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহর নামাজে জানাজা আজ বিকেল ৪টায় ঢাকা সেনানিবাসের সেনা কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় মাননীয় উপদেষ্টা, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.), মাননীয় উপদেষ্টা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ফারুক-ই-আজম, বীর প্রতীক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, এসবিপি, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান, ওএসপি, এনপিপি, এনডিসি, এনসিসি, পিএসসি, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, বিবিপি, ওএসপি, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি, সাবেক সেনাবাহিনী প্রধানগণ, ঢাকা ও মিরপুর সেনানিবাসের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং সকল পদবীর সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জানাজা শেষে মরহুমের মরদেহ বনানী সামরিক কবরস্থানে যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।