৫ টাকা দরে মিষ্টি ও নিমকি বিক্রি করে সাড়া ফেলেছেন নিজাম উদ্দিন

এস.এম.রকি,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দ্রবমূল্যের উর্দ্ধগতির সময়েও ৫টাকা দরে মিষ্টি ও নিমকি বিক্রি করে নিজের ভাগ্য বদলের সাথে দিনাজপুরের খানসামায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন নিজাম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। প্রায় ২১-২২ বছর থেকে পাড়ায় পাড়ায় মিষ্টি ও নিমকি ফেরি করে বিক্রি করেন তিনি। মিষ্টি ও নিমকি তৈরির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধিতে লাভ কমলেও বিক্রি কমেনি তাঁর। ওই এলাকায় নিজাম উদ্দিনের মিষ্টি ও নিমকির ভালো চাহিদা রয়েছে। সেই সাথে কোন অনুষ্ঠানের জন্য অনেকেই অগ্রিম অর্ডার দেন।

প্রায় ৬২ বছর বয়সী নিজাম উদ্দিন উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া গ্রামের পূর্ব মাদার ডাঙ্গার মেছের মন্ডলের ছেলে। যুবক বয়সে তিনি কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও ২০০০ সালের শুরুর দিকে এক ভগ্নিপতির মাধ্যমে মিষ্টি ও নিমকি তৈরীর হাতেখড়ি হয়। পরবর্তী সময়ে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সময়ের সাথে বদলে গেছে জীবিকা। উপার্জিত অর্থে চলছে সংসার।

মিষ্টি তৈরী ও বিক্রয়কারী নিজাম উদ্দিনের সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি জানান, ময়মনসিংহ থেকে তাঁর এক ভগ্নিপতি এই এলাকায় এসে বসবাস শুরু করলে প্রায় ২১-২২ বছর পূর্বে তাঁর হাত ধরেই এই পেশায় আসেন। নিজ এলাকা থেকে গাভীর দুধ সংগ্রহ ও প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করে পরিবারের সদস্যের সহায়তায় নিয়মিত মিষ্টি ও নিমকি তৈরী করেন তিনি। প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১৫-১৬ কেজি মিষ্টি ও ১৫-১৬ কেজি নিমকি তৈরী ও বিক্রি করেন নিজাম উদ্দিন। এই পেশার শুরুতে জিনিসপত্রের দাম কম থাকায় মাত্র ১ টাকা দরে প্রতি পিস মিষ্টি ও নিমকি বিক্রি করলেও বর্তমানে সেটি ৫ টাকায়। করোনা কালীন সময় থেকেই জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির সাথে মিষ্টি ও নিমকির দামও বৃদ্ধির কথা জানান তিনি। এই পেশা থেকে তাঁর উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংসারের ভরণপোষণসহ সুখেই দিন কাটে বলে আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করেন তিনি।

সোমবার ( ২৭ জানুয়ারী) সকালে ওই ব্যক্তির বাসায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্ত্রী সাহারা বেগম ও ছোট ছেলে সোলাইমান ইসলামসহ মিষ্টি ও নিমকি তৈরীর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন নিজাম উদ্দিন। প্রতি পিস ৫ টাকা দরে
টাটকা ও সুস্বাদু মিষ্টি ও প্রতি পিস ৫ টাকা দরে গরম গরম নিমকি ক্রয় করতে তাঁর বাসায় অনেকেই এসেছেন।

জানা যায়, নিজাম উদ্দিনের তৈরী এই মিষ্টি প্রতি কেজি ৫৫-৬০ টি ও নিমকি প্রতি কেজিতে প্রায় ৬০ টি হয়। বর্তমানে প্রতি পিস ৫ টাকা ও প্রতি ২৫০-২৬০ টাকা দরে বিক্রি করছেন তিনি । এতে উৎপাদন খরচ বাদে প্রতি সপ্তাহে তাঁর ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লাভ হয়।

স্থানীয় যুবক রহিদুল ইসলাম রাফি বলেন, নিজাম চাচার মিষ্টি-নিমকির ভালোই স্বাদ। আমরা প্রায়ই ওনার তৈরী মিষ্টি ও নিমকি খাই, ভালোই লাগে।

মিষ্টি ও নিমকি তৈরীকারক নিজাম উদ্দিন বলেন, সৃষ্টিকর্তার রহমতে প্রতিদিন ভালোই মিষ্টি ও নিমকি বিক্রি করি। আমার কাছে রেগুলার কিছু গ্রাহক আছে যারা নিয়মিতই মিষ্টি-নিমকি ক্রয় করেন। এতে অর্থ উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংসার চলছে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সময়ে দুধ, চিনি, ময়দা ও ভোজ্যতেল মিষ্টি ও নিমকি তৈরির উপকরণের দাম বেড়েছে। তবুও মান ঠিক রেখে নিয়মিত মিষ্টি ও নিমকি তৈরী ও বিক্রয় করতেছি।