নিজের বাড়ি ভস্মীভূত, তবু ৮ লাখ ডলার ত্রাণ দিলেন অভিনেত্রী

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর ভয়ংকর বির্পযয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দাবানলে পুড়ছে সেখানকার ১১৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা। ইতোমধ্যে প্রায় ১০ হাজার অবকাঠামো পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রাণ বাঁচাতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। যার মধ্যে রয়েছে হলিউডের একাধিক তারকার বিলাসবহুল আবাসন।

হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্যারিস হিলটন। একজন ব্যবসায়ী হিসেবেও সুপরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত তিনি। ১১:১১ মিডিয়া ইমপ্যাক্ট নামে তার একটি অমুনাফাভোগী সংস্থা রয়েছে। এর মাধ্যমে লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য ৮ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছেন তিনি।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং ব্যবসায়ী প্যারিস নিজেও চলমান দাবানলের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের অভিজাত এলাকা মালিবুতে ছিল তার বিলাসবহুল বাড়ি। দাবানলে তার বাড়ি ভস্মীভূত হয়ে গেছে। সে দৃশ্য টিভিতে দেখে হাউমাউ করে কেঁদেছেন এই অভিনেত্রী।

তবে এই ক্ষতিতে তিনি গুটিয়ে যাননি। বরং অসহায়দের জন্য ত্রাণ সংগ্রহ করতে মাঠে নেমেছেন। আশ্রয় হারানো শিশু ও তাদের পরিবারগুলোর সাহায্যের জন্য একটি জরুরি তহবিল চালু করেন। মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেই তহবিলে ৮ লাখ ডলার জমা হয়েছে।

এছাড়াও হিলটন গোফান্ডমির ওয়াইল্ডফায়ার রিলিফ ফান্ডে দেড় লাখ ডলার অনুদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই অর্থ দিয়ে ১৫০টি পরিবারে নগদ সহায়তা প্রদান করা হবে।

হিলটন ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘একজন মা হিসেবে আমি কল্পনাও করতে পারি না যে শিশুরা অনিরাপদ রয়েছে। এটা আমাকে খুবই বিপর্যস্ত করে দিচ্ছে। তাদের নিরাপদ স্থানের ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছি না। আমি সবাইকে আহ্বান করবো আসুন বাস্তুহারা পরিবারগুলোর পাশে থাকি। বিশেষ করে যেসব পরিবারে শিশুরা ভয় ও ঝুঁকির মধ্যে সময় পার করছে।’

প্যারিস হিলটন দাবানালে আহত এবং ভীত পশুগুলোর প্রতি সদয় হতেও মানবিক আহ্বান জানিয়েছেন।

নিজের পুড়ে যাওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপ দেখতে গিয়েছিলেন প্যারিস হিলটন। সেসবের ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন প্যারিস হিলটন। সেখানে ক্যাপশন লিখেছেন, ‘আমি এখন সেই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে যেটা আমার স্বপ্নের বাড়ি ছিল। কতটা কষ্ট হচ্ছে বলে বোঝাতে পারব না। প্রথম যখন খবরটা পেলাম, আমি কিছুক্ষণের জন্য হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারিনি প্রথমে।’

অভিনেত্রীর কথায়, ‘এটা শুধু আমার বাড়ি ছিল না। এই সেই বাড়ি যেখানে আমরা একসঙ্গে স্বপ্ন দেখেছি, হেসেছি-কেঁদেছি। পুরো পরিবারকে নিয়ে কত সুন্দর সুন্দর স্মৃতি তৈরি করেছি। যে বাড়ির প্রতিটা কোণায় কোণায় ভালোবাসার চিহ্ন রয়েছে। সেই বাড়ি এভাবে ছাইয়ে পরিণত হয়ে গেছে।’