শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ রাশিয়াকে সর্তক করে বলেছে, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে না গেলে দেশটির বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। শুক্রবার (১৪ মার্চ) কানাডার কুইবেকে সংস্থাটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন থেকে এ হুমকি দেওয়া হয়।
জি-৭ এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আরও জানিয়েছেন, তারা ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের বিপক্ষে এবং ইউক্রেনের ভূখণ্ড রক্ষার লড়াইকে সমর্থন করে।
রাশিয়ার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞার হুমকি এমন সময় এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের ঘটনায় জি-৭ ভুক্ত মিত্রদেশগুলোর মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এমনকি সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ কানাডার সার্বভৌমত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জি-৭ ভুক্ত দেশগুলো হচ্ছে, ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান এবং যুক্তরাষ্ট্র।
বিবৃতিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব, যা ইতোমধ্যে ইউক্রেন মেনে নিয়েছে। এখন সেটি রাশিয়াকেও পূর্ণাঙ্গভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে। যদি রাশিয়া তাতে রাজি না হয়, তাহলে আরও কঠিন নিষেধাজ্ঞাসহ রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদের ব্যবহার এবং ইউক্রেনকে অতিরিক্ত সহায়তার কথা আলোচনা করেছে জোটের দেশগুলো।
সাত দেশের জোটটি আরও জানায়, ইউক্রেনের জন্য শক্তিশালী ও বিশ্বাসযোগ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। যেন তারা যে কোনো নতুন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জনানো হয়নি।
এদিকে, ট্রাম্প ইউক্রেনের জন্য ন্যাটোর দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, ট্রাম্প রাশিয়ার ওপর আর কোনো নিষেধাজ্ঞা দিতে চায় না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে অনেক অপশন আছে। প্রয়োজন হলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি ট্রাম্পের নেতৃত্বে কূটনৈতিক তৎপরতার প্রশংসা করে রুবিও আরও জানান, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি বিষয়ে আশাবাদী হওয়ার কারণ রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর পুনরায় রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা এবং ইউক্রেনে গোয়েন্দা ও সামরিক সহায়তা কার্যক্রম বন্ধের ফলে ইউক্রেন বেশ চাঁপে পড়ে। কিন্তু দৃশ্য দ্রুত বলদে যায়, যখন মার্কো রুবিও এবং ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালজ গত মঙ্গলবার সৌদি আরবে ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সর্ম্পক স্বাভাবিক করার আগ্রহ প্রকাশ করে। এর আগে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদেমির জেলেনস্কি ওয়াশিংটন সফরে গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন।
যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন জানিয়ে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদেমির পুতিন বলেন, এ ব্যাপারে তিনি আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা চান। অবশ্য জার্মানি ও ইউক্রেন পুতিনের এ মন্তব্যকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কৌশল হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।