ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
বিধি মোতাবেক অর্জিত মাইলেজ প্রদানের দাবীতে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে দুটি আন্তঃনগর দুইটি ট্রেনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে রেলওয়ে রানিং স্টাফ কর্মচারীরা। সোমবার (২০ জানুয়ারী) খুলনা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী আন্তঃনগর কপোতাক্ষ ও চিলাহাটিগামী রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন ঈশ্বরদী স্টেশন পৌঁছালে রানিং স্টাফ কর্মচারীরা রেললাইনে বিক্ষোভ মিছিল করে। বিক্ষোভ মিছিল শেষে লিফলেট বিতরণ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ট্রেন পরিচালক (গার্ড) ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই’জ) ট্রেন চালক (এলএম) সহকারী ট্রেন চালকরা (এএলএম) অংশগ্রহন করেন। আগামী ২৭শে জানুয়ারী রাত ১২টার মধ্যে দাবী না মানলে ২৮ জানুয়ারী সকাল থেকে অনিদিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা সমাবেশ থেকে দেওয়া হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, কর্মদিবস ৮ ঘণ্টা হলেও রানিং স্টাফদের গড়ে ১৫-১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। এজন্য তাঁদের দেওয়া হয় বিশেষ আর্থিক সুবিধা, যাকে রেলওয়ের ভাষায় বলা হয় মাইলেজ। মাইলেজ রানিং স্টাফদের বেতনেরই অংশ। মাইলেজের হিসাব হলো, প্রতি ১০০ কিলোমিটার ট্রেন চালালে রানিং স্টাফরা মূল বেতনের এক বেসিকের সমপরিমাণ টাকা বেশি পাবেন। আট ঘণ্টায় এক দিনের কর্মদিন ধরলে রানিং স্টাফদের প্রতি মাসে কাজ দাঁড়ায় ২ বা ৩ মাসের সমপরিমাণ। তাঁদের বেতনও সেভাবেই দেওয়া হয়। এছাড়া মূল বেতনের হিসাবে অবসরকালীন ভাতা যা হয়, তার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৭৫ ভাগ বেশি দিয়ে তাদের পেনশন দেওয়া হয়। কিন্তু ২০২২ সালের জানুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় রানিং স্টাফদের সেই সুবিধা বাতিল করে। এরপর থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের রানিং স্টাফ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে আসছে।
রেলওয়ে গার্ডস কাউন্সিল কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, ব্রিটিশ আমলে রেল চালুর শুরু থেকে ১৬০ বছরের অধিক সময় ধরে রেলওয়েতে প্রচলিত কোড ও বিধি বিধানের আলোকে রানিং স্টাফরা ‘পার্ট অফ পে’ রানিং এলাউন্স এবং ৭৫ ভাগ রানিং এলাউন্স যোগ করে পেনশন পেয়ে আসছিল। কিন্তুঅর্থ মন্ত্রনালয়ের ৩/১১/২০২১ তারিখের পত্রে রানিং এলাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানে অসম্মতি জানায়। ভবিষ্যতে এই জটিলতা এড়াতে অর্থ মন্ত্রনালয়ের অসম্মতি প্রত্যাহার করে লিখিত আদেশ জারি করতে হবে। ২০২২ পরবর্তী সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত ও পদোন্নতিপ্রাপ্ত রানিং স্টাফদের পূর্ববর্তী রানিং স্টাফদের ন্যায় মাইলেজ ভাতা এবং পেনশন সুবিধা প্রদান করতে হবে। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত রানিং স্টাফদের নিয়োগপত্রের বৈষম্যমূলক ১২ এবং ১৩ নং শর্তটি বাতিলসহ দাবী পূরণ করা প্রশাসনের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সেটা না করে দীর্ঘদিন নানা তালবাহানা করা হচ্ছে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান। সঞ্চালনা করেন ঈশ্বরদী শাখার দপ্তর সম্পাদক শাহিদ হোসেন। অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রবিউল ইসলাম, রেল শ্রমিক দল ঈশ্বরদী শাখার সভাপতি মাসুদ রানা নয়ন, শ্রমিক দলের সম্পাদক ছবি মন্ডল, রানিং স্টাফ ঈশ্বরদী শাখার সম্পাদক রবিউল ইসলাম, টিটিই’জ এসোসিয়েশনের সম্পাদক আকরামুল হক প্রমুখ।