ভারতের কুদানকুলাম এনপিপি’র জন্য পরমাণু চুল্লী পাঠালো রসাটম

বিশেষ প্রতিনিধি:
ভারতের কুদানকুলামে বাস্তবায়নাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ষষ্ঠ ইউনিটের জন্য প্রয়োজনীয় পরমাণু চুল্লী ভিভিইআর-১০০০ শিপমেন্ট করেছে রসাটমের যান্ত্রিক প্রকৌশল শাখা এটমাশ। রাশিয়ার নভোসিবিয়েরস্ক সমূদ্র বন্দর থেকে ৩২০টন ওজনের এই চুল্লীটি সমূদ্র পথে ছয় হাজার মাইলের অধিক অতিক্রম করে ভারতে পৌছুবে। এছাড়াও ২০২৫ সালে এই ইউনিটের জন্য ৪টি বাষ্প জেনারেটর পাঠাবে রসাটম। রসাটমের মিডিয়া প্রেরীত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে পরমাণু চুল্লী পাঠানোর খবর জানিয়েছে।

ভিভিইআর-১০০০ চুল্লীর মূল ডিজাইনকারী প্রতিষ্ঠান ওকেবে গিদ্রোপ্রেসের জেনারেল ডিজাইনার ভ্যালেরি ক্রিঝানোভস্কি জানান, “বৈশ্বিক পরমাণু শিল্পে আমাদের দৃঢ় অবস্থান সত্তে¡ও আমরা ক্রমাগতভাবে নিজস্ব প্রযুক্তির অধিকতর উন্নয়ন ও সাফল্যের লক্ষ্যে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও অধিকতর আর্থিক দক্ষতা অর্জনে আমরা নিরলসভাবে নিজস্ব ইকুইপমেন্টগুলোর নকশার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে আমরা নতুন একটি পরিমানু চুল্লী নিয়ে কাজ করছি, যাতে সর্বাধুনিক পরিচালন বৈশিষ্ট্য সংযোজিত হচ্ছে এবং এগুলোর উৎপাদন ক্ষমতাও হবে বেশি”।

কুদানকুলাম এনপিপি ভারতের সর্ব বৃহৎ পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং রুশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক প্রযুক্তিগত ও এনার্জী সহযোগিতার একটি ফ্যাগশীপ প্রকল্প। প্রকল্পটিতে ৬টি বিদ্যুৎ ইউনিট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, প্রতিটি ইউনিট রুশ ভিভিইআর-১০০০ রিয়্যাক্টর ভিত্তিক। প্রকল্পটির মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৬,০০০মেগাওয়াট। এক এবং দুই নম্বর ইউনিট যথাক্রমে ২০১৩ ও ২০১৬ সালে ভারতের জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হওয়ার পর সফলভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে যাচ্ছে। তিন এবং চার নম্বর ইউনিটের নির্মান কাজ সমাপ্তির পর্যায়ে। পাঁচ এবং ছয় নম্বর ইউনিটের নির্মান কাজ এগিয়ে চলছে।

কুদানকুলাম প্রকল্পের বিদ্যুৎ ইউনিটের ডিজাইন তৈরি এবং এর নির্মান কাজ্র দায়িত্ব পালন করছে রসাটমের প্রকৌশল শাখা। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির অধীনস্থ অন্যান্য কোম্পানি বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট সরবরাহ করছে। প্রকল্পটির পুরো জীবনকাল জুড়ে পরমাণু জ্বালানী সরবরাহ করবে রসাটম।

একটি ভিভিইআর চুল্লী নির্মান করতে প্রায় দুই বছর সময় লেগে যায়। নির্মানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নির্ভূলতা এবং আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে হয়। ২৮৯টি কন্ট্রোল পয়েন্টে জেনারেল ইন্সপেকশন করা হয়ে থাকে। নির্মানকালে প্রতিটি অপারেশন তত্ত¡াবধান করেন বিদেশী গ্রাহক এবং তাদের মনোনীত কোন প্রতিষ্ঠান।

রাশিয়ার কারিগরী ও আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশর রূপপুরে নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর দু’টি ইউনিটের প্রতিটিতে স্থাপন করা হয়েছে ৩+ প্রজন্মের রুশ ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর। প্রকল্পটির মোট উৎপাদন ক্ষমতা ২,৪০০ মেগাওয়াট। রসাটমের প্রকৌশল শাখা রূপপুর প্রকল্পের জেনারেল ডিজাইনার এবং কন্ট্রাকটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।