আবারও মন্ত্রী হয়ে ফিরতে পারেন টিউলিপ!

দুর্নীতির অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেছেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্নি ও যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। তবে পদত্যাগপত্রে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তার দাবিকে সমর্থন যুগিয়েছেন মন্ত্রিত্বের মানদণ্ডবিষয়ক স্বাধীন উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাস। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে দ্য গার্ডিয়ানের বিশ্লেষণ বলছে, ফের মন্ত্রিত্ব ফিরে পাবেন টিউলিপ সিদ্দিক।

টিউলিপের পদত্যাগের পর প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দ্য গার্ডিয়ান জানায়, টিউলিপ মন্ত্রিত্বের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন কি না তা শেষ পর্যন্ত ম্যাগনাস বুঝতে পারেননি। ম্যাগনাস তাকে অভিযুক্তও করেননি বা তার বিরুদ্ধে অনৈতিক কোনো কিছু করার প্রমাণ খুঁজে পাননি। তবে ম্যাগনাস টিউলিপকে সরাসরি নির্দোষ ঘোষণা না করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে এখনও অনেক প্রশ্ন রয়েছে বলে মন্তব্য করেন। এরপরই টিউলিপ সিদ্দিক স্বেচ্ছায় মন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি বরখাস্ত না হওয়াকে ফের মন্ত্রীর দায়িত্বে তার ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এ ধরনের ইঙ্গিত মিলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের এক মন্তব্যে। টিউলিপের পদত্যাগের প্রতিক্রিয়ায় তাকে একটি চিঠি লিখেছেন স্টারমার। তাতে লিখেন, আপনি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আপনার জন্য ভবিষ্যতের দরজা খোলা রয়েছে।

স্টারমার দুঃখের সঙ্গে টিউলিপের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছেন জানিয়ে বলেন, লাউরি ম্যাগনাস আমাকে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি আপনার দিক থেকে মিনিস্ট্রিয়াল কোড লঙ্ঘন এবং কোনো আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাননি।

টিউলিপের ফিরে আসার সম্ভাবনার বিশ্লেষণে গার্ডিয়ান আরও একটি প্রসঙ্গ টেনেছে। বলা হচ্ছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে টিউলিপের রাজনীতির সখ্যতা বেশ পুরোনো। তাদের দুজনকে বন্ধু হিসেবেই জেনে আসছেন লেবার পার্টির নেতাকর্মীরা। বিভিন্ন সময় দুজন একে অপরকে দলের অভ্যন্তরে ও জাতীয় নির্বাচনে জিততে সহায়তা করেন। বিষয়টি স্বীকার করে একে অন্যের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করতে শোনা গেছে।

বিশেষ করে ২০২০ সালের একটি ঘটনা বারবার সামনে আসছে। তখন কিয়ার স্টারমার লেবার নেতা হন। তাকে সমর্থন ও বিজয়ী হতে সাহায্য করেন টিউলিপ। ওই সময় টিউলিপ সিদ্দিক স্থানীয় সংবাদপত্রে কিয়ার স্টারমারকে ‘দুঃখের মধ্যেও একজন ভালো বন্ধু’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারের দুর্নীতির সঙ্গে তার নাম উঠে আসার প্রেক্ষাপটে তিনি পদত্যাগ করলেন। অভিযোগ ওঠে, তিনি তার খালা শেখ হাসিনার দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে টিউলিপের ভোগ-দখলে থাকা দুটি ফ্ল্যাটের তথ্য প্রকাশ্যে আসে। এ ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা সাংবাদিককে হুমকি, ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তা করানোসহ টিউলিপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় দলের ভেতরে-বাইরে চাপে পড়েন তিনি।