জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে আজ দুই দিনব্যাপী জাতীয় সংলাপ শুরু হচ্ছে। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বেসরকারি সংগঠন ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ (এফবিএস) আয়োজিত সংলাপের উদ্দেশ্য ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভার্চুয়ালি অংশ নেবেন। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের সাতজন উপদেষ্টা, ২০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা অংশ নেবেন। অনুষ্ঠান শেষে ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ একটা রূপান্তরপর্বে প্রবেশ করেছে। শহিদদের আকাঙ্ক্ষার পটভূমিতে এফবিএস ব্যাপকভিত্তিক জাতীয় সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে। সংলাপের উদ্বোধন করবেন জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও শহিদপরিবারের সদস্যরা। বিশেষ বক্তা হিসাবে থাকবেন সমাজ বিশ্লেষক ও রাষ্ট্রচিন্তক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, অর্থনীতিবিদ ড. মুশতাক হুসাইন খান। সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজ। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিচার, সংস্কার, নিরাপত্তা ও নির্বাচন বিষয়ে ছয়টি অধিবেশনে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। সংবাদ সম্মেলনে এফবিএস-এর আহ্বায়ক সাংবাদিক মনির হায়দার, দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক সালেহ উদ্দিন, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান, আইনজীবী দিলরুবা শারমিন, সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ, সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক তৌফিক জোয়ার্দার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সালেহ উদ্দিন বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দল এবং অন্যদের মধ্যে একটি দোদুল্যমান অবস্থা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় দেশকে এগিয়ে নিতে জাতীয় ঐক্য জরুরি। সুনির্দিষ্ট কয়েকটি ইস্যুতে গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিকে একমত হতে হবে। সেজন্য এ আয়োজন। তিনি বলেন, উদ্যোগটি বেসরকারি। কিন্তু সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা আছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সালেহ উদ্দিন বলেন, ১৯৭১ সালের পর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির কোনো গুরুত্ব ছিল না। ২০২৪ সালের আন্দোলনে আওয়ামী লীগ পরাজিত শক্তি। ফলে পরাজিত শক্তিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানোর যৌক্তিক কোনো কারণ নেই।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মনির হায়দার বলেন, আওয়ামী লীগ এবং তাদের শরিকরা ১৫ বছরে দেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে। ফলে তাদের সংলাপে ডাকার কোনো সুযোগ নেই। এখানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে।
জাহেদ উর রহমান বলেন, এখানে বিষয়ভিত্তিক সংলাপ হবে। এক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীরা তাদের মতামত তুলে ধরবেন। ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আমরা গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে জাতীয় ঐক্য চাই। এক্ষেত্রে সংলাপে ফ্যাসিবাদ এবং তাদের সহযোগী ছাড়া সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, সংলাপে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় জোটের কোনো শরিক দলের প্রতিনিধিকে আহ্বান জানানো হয়নি।