ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
স্বাস্থ্যসুবিধা সম্প্রসারণে নিরবিচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য ঈশ্বরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থাপন করা হলো অক্সিজেন প্লান্ট। জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় গ্লোবাল ফান্ডের আর্থিক সহায়তায় ইউনাইটেড নেশন অর্গানাইজেশন ফর প্রজেক্ট সার্ভিসের (UNOPS) মাধ্যমে এই পিএসএ অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। প্লান্টের অবকাঠামো নির্মাণ পূর্বক যন্ত্রপাতি ও আনুষাঙ্গিক সামগ্রী গত ২৩ ডিসেম্বর হস্তান্তর এবং ২৫ ডিসেম্বর রাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান এটি উদ্বোধন করেছেন বলে জানা গেছে। এই কর্মসূচির আওতায় দেশের মেডিকেল কলেজসহ মোট ২৯টি অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপিত হয়েছে। এতে দেশে অক্সিজেনের চাহিদা অনেকটাই পূরণ হবে বলে সংশ্লিষ্ঠরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। পাবনা জেলায় শুধু ঈশ্বরদীতেই এই প্লান্ট বসলেও উৎপাদিত অক্সিজেন স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর সিলিন্ডারের মাধ্যমে অন্যান্য স্থানেও সরবরাহ করতে সক্ষম।
এদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান বুধবার অক্সিজেন প্লান্ট উদ্বোধন ও ঈশ্বরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করে হাসপাতালটিকে ১০০ শয্যায় উন্নিতকরণের আশ্বাস দিয়েছেন বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আলী এহসান জানান, প্রাকৃতিক বাতাসে অক্সিজেন ২১ ভাগ, নাইট্রোজেন ৭৮ ভাগ এবং অন্যান্য উপাদান রয়েছে ১ ভাগ। প্রেসারের মাধ্যমে প্রাকৃতি থেকে বাতাস সংগ্রহ করে জিওলাইট কেমিকেলের সাহায্যে নাইট্রোজেনকে শোষণ করে বুষ্টার ট্যাংকিতে জমা হবে। বাতাসের চেয়ে ৪-৫ গুণ প্রেসারে অক্সিজেন থাকে। এরচেয়েও ১৫০ গুণ প্রেসারে বুষ্টারের মধ্যে সেট করবে। এতে খুব অল্প জায়গায় বেশী পরিমাণে অক্সিজেন থাকতে পারে। এই প্লান্ট থেকে প্রতি মিনিটে ৯৪৫ লিটার অক্সিজেন উৎপাদন হবে। এই অক্সিজেন দুইভাবে ব্যবহার করা যাবে। একটি হলো বড় বড় সিলিন্ডারে রিফিল করা। আরেকটি পাইপ লাইনের সাহায্যে সরাসরি হাসপাতালের ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইনে সাপ্লাই করা যাবে। উদ্বোধনের পরেও সম্পূর্ণভাবে এখনও কার্যকর করা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, জরুরী ভিত্তিতে কার্যকর রাখার জন্য ডিজেল জেনারেটর বসানো হয়েছে। ডিজেলে খরচ অনেক বেশী, প্রতিঘন্টায় ২৫-৩০ লিটার ডিজেল লাগে। এতে খরচ অনেক বেশী পড়বে। আমরা বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য নেসকোকে চিঠি দিয়েছি। নেসকো পরিকল্পনা ও প্রাক্কলন করে এখানে বিদ্যুতের সাবষ্টেশন বসাবে। এরপরই আমরা এই প্লান্টটিকে সম্পূর্ণভাবে পরিচালনা করতে পারবো।
ডাঃ এহসান আরও বলেন, আমদানি নির্ভরতা কমে প্লান্টগুলো থেকে উৎপাদিত অক্সিজেন দেশের চাহিদা অনেকটাই পূরণ করতে সক্ষম হবে। উৎপাদিত অক্সিজেন ঈশ্বরদী হাসপাতালের চাহিদা মিটিয়ে সিলিন্ডারের মাধ্যমে অন্যান্য হাসপাতালে বিপুল পরিমাণে সরবরাহ করা যাবে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোন নির্দেশনা আসেনি।
মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারীর ১০০ শয্যায় হাসপাতাল উন্নিতের প্রসংগে তিনি বলেন, জনসংখ্যা ও গুরুত্ব বিবেচনায় আগে থেকেই ১০০ শয্যায় উন্নিতের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ছিলো। উন্নিতকরণের জন্য হাসপাতাল উর্দ্ধমূখি সম্প্রসারণে খরচ কম পড়বে। তবে জনবল বৃদ্ধিসহ অন্যান্য উপকরণের প্রয়োজন হবে। বিষয়গুলো মাননীয় বিশেষ সহকারী মহোদয়ের কাছে উপস্থাপন করা হলে তিনি উন্নিতকরণের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।