গুরুদাসপুরে লিচুর রাজ্যে মৌ চাষে লাভবান হচ্ছেন খামারী ও চাষীরা

মো. আখলাকুজ্জামান, গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.
লিচুর রাজ্য খ্যাত নাটোরের গুরুদাসপুরে এ বছর তিন শতাধিক লিচু বাগানে মৌমাছির ‘মৌ বাক্স’ স্থাপন করেছেন লিচু চাষী ও মৌ খামারিরা। লিচুর বাগানে মৌমাছি চাষে লাভবান হচ্ছেন তারা। ধানের পরেই এলাকায় লিচুর আবাদে খ্যাতি রয়েছে। উপজেলায় প্রায় ১ কোটি টাকার ৩০ মেট্রিকটন লিচু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার নাজিরপুর, বিয়াঘাট, চাপিলা, ধারাবারিষা ইউনিয়নসহ উপজেলাজুড়ে বাণিজ্যিকভাবে মোজাফ্ফর, বেদেনা, বোম্বাই, মাদ্রাজি, চায়না-থ্রি জাতের লিচুর আবাদ হয়েছে। লিচু গাছের নিচেই ৭০ থেকে ৮০টি করে মৌ বাক্স বসিয়েছেন খামারিরা। লিচুর মুকুলে ছেঁয়ে গেছে বাগানগুলো। গাছে গাছে সুগন্ধ ছড়াচ্ছে। মৌমাছির ঝাঁক বসছে দলে দলে। মধু নিয়ে আবার মৌ বাক্সে উড়ে এসে বসছে।
মৌ চাষী সাইদুল ইসলাম, আব্দুল করিম, শাহিন আলম, সোহেল সরকার জানান- বাগানে শতাধিক ছোটবড় কাঠের বাক্স স্থাপন করেছেন তারা। প্রতিটি বাক্সে একটি রানি মৌমাছি, একটি পুরুষ মৌমাছি ও অসংখ্য কর্মী মৌমাছি রয়েছে। কর্মী মৌমাছিরা ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে যায় লিচুর মুকুলে। পরে মুকুল থেকে মধু সংগ্রহ করে নিজ নিজ মৌচাকে এনে জমা করে।
খামারিরা বলেন, সরিষার মধুর দাম বেশি। লিচুর মধু বাড়তি উপার্জন তাঁদের। স্থানীয় চাষি ছাড়াও সাতক্ষীরা, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ, পাবনাসহ দেশের অনেক জেলা থেকেও মৌচাষিরা আসেন মধু সংগ্রহে। ছোটবড় নানা আকৃতির মৌমাছির বাক্স বসিয়ে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মধু সংগ্রহ করে থাকেন তারা।
নাজিরপুর ইউনিয়নের পুরস্কারপ্রাপ্ত লিচু চাষী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ২০০৮ সালের দিকে নাজিরপুর ইউনিয়নে স্বল্প পরিসরে লিচুর আবাদ শুরু হয়েছিল। এখন উপজেলাজুড়েই বাণিজ্যিকভাবে লিচুর আবাদ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে লিচু চাষে সফলতা পাচ্ছেন তাঁরা।
গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদ বলেন, লিচুর মুকুলে মৌমাছি বসলে পরাগায়ন ভালো হয়। ফলে ওই গাছে বা বাগানে লিচুর ফলন বাড়ে। উপজেলায় ৪১০ হেক্টর জমিতে ৩ শতাধিক বাগান রয়েছে। বাগান গুলোতে ১০০ জন খামারি ৭ হাজার মৌ বাক্স স্থাপন করেছেন। উপজেলায় ৩০ মে.টন লিচু উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা।#

preload imagepreload image