রাজশাহীর বাগমারায় আলু চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় চাষিদের

নাজিম হাসান,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় এ বছর শীত মৌসুমে আলু চাষিরা আগাম আলু চাষ করে বাম্পার ফলন পেতে চলেছে। আলু চাষের দেড় দুই মাস পর আলুর গাছে মাঠ ভরে গেছে। এলাকায় এখন মাঠের পর মাঠ দিগন্ত মাঠজুড়ে আলুর গাছগুলো এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতায় সবুজের মহা সমারোহে চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে কৃষকরা এবার আলু চাষে ভাল দাম পাওয়ায় তারা আলু চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন। এবং নতুন আলুর ফলনও ভালো মিলছে। এছাড়া আলু তোলার ভরা মৌসুম শুরু না হলেও আগাম জাতের আলুতে ইতোমধ্যে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। ক্ষেতে আলু ভালো রাখতে প্রতিষেধক হিসেবে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করছেন আলু চাষিরা। তারা বলছেন এবার বাজার মূল্য ভাল হওয়ায় সবাই আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন। বাগমারায় আলুচাষের মাটি উপযোগী ও ঊর্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়ায় এলাকায় প্রচুর পরিমাণে আলু চাষ হয়। চলতি বছরের শেষের দিকে পুরাতন আলুর দাম পেয়ে বেশী লাভের আসায় অধিক আলু চাষে এলাকার কৃষকরা ঝুঁকে পড়েছে। সে মোতাবেক অনেকেই আগাম আলু চাষ করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। ইতি মধ্যে আগাম জাতের আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। তবে হিমাগারে রাখার জন্য আলু উঠতে এখনো এক থেকে দেড় মাস সময় লাগতে পারে বলে চাষিরা জানান। যাত্রাগাছি গ্রামের কৃষক শহিদুর রহমান, সান্তপাড়ার আবজাল, ঝিকড়ার কাদের আলী জানান ১ বিঘা জমিতে আলুর বীজ সংগ্রহ থেকে শুরু করে উত্তোলন পর্যন্ত ৩০ হাজার থেকে ৩৫ টাকা খরচ পড়ে। এ বছর শীত মৌসুমে আলু চাষিরা আগাম আলু চাষ করে বর্তমানে বাজারে আলুর ভাল দাম পাওয়ায় তারা আলু চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানাগেছে, অন্যান্য ফসলের চেয়ে এই এলাকায় আলু বেশী পরিমাণ হওয়ায় এই অঞ্চলে মওসুমের জনপ্রিয় ফসল আলু। এ বছর উপজেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর। যা অতিক্রম করে চাষাবাদ হয়েছে সাড়ে ১৩ থেকে ১৪ হাজার হেক্টও জমিতে। এরমধ্যে অর্ধেক এর বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে উপজেলার গোয়ালকান্দি, চেউখালী, একডালা, সমসপাড়া, রামরামা, সাজুড়িয়া, কোনোপাড়া, তেলীপুকুর, উদপাড়া, হামিরকুৎসা, বলসিংপাড়া, বলদারপাড়া, সান্তপাড়া, বালিয়া, মাঝগ্রাম, তালঘরিয়া, মাড়িয়া, যাত্রাগাছি, যুগিপাড়ার ভাগনদি, তাহেরপুর পৌসভাসহ বিভিন্ন গ্রামে। সে মোতাবেক অনেকেই আগাম আলু চাষ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর ফলন ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, এ অঞ্চলের আলুর গুনগত মান ভাল। এ কারণে এখান থেকে প্রতি বছর আলু মৌসুমে ট্রাক যোগে আলু চালান দেয়া হয় উত্তরের বিভিন্ন অঞ্চলে। এছাড়া চাহিদা পূরণের পাশা-পাশি রাজধানীর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করা হয়। আর তাদের মতে, এবার শীত মৌসুমে লক্ষ মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি আলু চাষাবাদ হয়েছে দুর্গম বাগমরা অঞ্চলে।#