মৃত ব্যক্তির নামে দান-সদকা করলে কী হয়

ইসলামে দান-সদকার গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আল্লাহর পথে নিজেদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের (দানের) তুলনা সেই বীজের মতো যা থেকে সাতটি শীষ জন্ম নিলে, প্রত্যেক শীষে একশত করে দানা এবং আল্লাহ যাকে ইচ্ছে করেন বর্ধিত হারে দিয়ে থাকেন। বস্তুত, আল্লাহ হচ্ছেন অতি দানশীল ও সর্বজ্ঞ।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৬১)

অপর আয়াতে মহান আল্লাহ তা’য়ালা ঘোষণা দিয়েছেন, ‘যারা নিজের সম্পদ দিনে বা রাতে প্রকাশ্যে অথবা গোপনে আল্লাহর পথে খরচ করে তাদের জন্য তাদের প্রতিপালকের কাছে পুরস্কার আছে। তাদের কোনো ভয় নেই। তাদের কোনো চিন্তাও নেই।’ (সুরা বাকারা: ২৭৪)
অন্যদিকে, হাদিসে এসেছে- আদী ইবনু হাতিম (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.) কে বলতে শুনেছি, তোমরা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা করো এক টুকরা খেজুর সদকা করে হলেও (সহিহ বুখারি, ১৩৩৪)। এমনকি পরিবারের জন্য সওয়াবের নিয়তে ব্যয় করাও সদকা হিসেবে গণ্য হয়।
আবূ মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন- মানুষ তার পরিবারের জন্য সওয়াবের নিয়তে যখন খরচ করে, তখন তা হয় তার সদকা স্বরূপ। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৩)
তবে কেউ মারা গেলে তার জন্য তিনটি রাস্তা ছাড়া আমলের সব দরজা বন্ধ হয়ে যায়। আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- যখন মানুষ মারা যায় তখন তিন প্রকার আমল ব্যতীত তার সকল আমল বন্ধ হয়ে যায়।
১. সদকায়ে জারিয়া বা যে সৎকাজের কল্যাণ দীর্ঘস্থায়ী, ২. ইলম বা জ্ঞান যার দ্বারা অন্যের উপকার সাধিত হয় এবং ৩. নেককার সন্তান যে তার জন্য দোয় করতে থাকে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪০৭৭)
এ ক্ষেত্রে মারা যাওয়ার পর বাবা-মায়ের নামে সন্তান সদকা করলেও তারা সেই সওয়াব পান। আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলো, আমার পিতা মারা গিয়েছেন এবং তিনি কিছু সম্পদ রেখে গেছেন। কিন্তু ওসিয়াত করেননি। তার পক্ষ থেকে সদকা করা হলে কি তার গুনাহ মাফ হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। (সহিহ মুসলিম, ৪০৭৩)
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত অপর একটি হাদিসে এসেছে, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.) কে বললো, আমার মা হঠাৎ মারা গেছেন। তার সম্পর্কে আমার বিশ্বাস এই যে, তিনি যদি কথা বলতে পারতেন তবে সদকা করতেন। আমি যদি তার পক্ষে সদকা করি, তবে কি আমার এ কাজের কোনো বিনিময় (সাওয়াব) হবে? জবাবে রাসুল (সা.) বলেন, হ্যাঁ। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪০৭৪)