পুলিশের কাছ থেকে আসামি ‘ছিনিয়ে’ নিলো বিএনপি নেতারা, ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জে মো. বেলাল নামে মারামারির মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তারের পর ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস আই) সাদেকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। তবে অভিযুক্তদের নাম-পরিচয় জানায়নি পুলিশ।

জানা গেছে, বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামে আসামি বেলালকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। এর সঙ্গে সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ, ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আবুল কাশেমসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত বেলাল ভবানীগঞ্জের চরভূতা গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মনির হোসেনের ছেলে ও বিএনপির স্থানীয় কর্মী। জমি সংক্রান্ত বিরোধে মারামারির ঘটনায় সদর মডেল থানায় দায়ের করা এক মামলার প্রধান আসামি তিনি। ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত সুলতান আহমদের ছেলে নুর ইসলাম বাদী হয়ে গত ২৬ নভেম্বর মামলাটি করেন করেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, ঘটনার সময় বেলাল একটি দোকানে বসা ছিল। সদর থানার সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় দোকানে থাকা বিএনপি নেতা সাইফুদ্দিন খালেদ ও আবুল কাশেমসহ কয়েকজন সাদা পোশাকধারীদের পরিচয় জানতে চায়। এরই মধ্যে লোকজন জড়ো হতে থাকে। একপর্যায়ে বিএনপি নেতারা বেলালকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে।

পরে সেখান থেকে সবাই গিয়ে আবুল কাশেমের বাড়িতে অবস্থান নেয়। রাতে বেলালসহ জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালালেও সবাই পালিয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, মারামারির মামলার আসামি বেলালকে গ্রেপ্তারে বুধবার রাতে শরীফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। সেখান থেকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়ার সময় পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন।

সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বলেন, বেলালসহ আমরা দোকানে চা পান করতে বসি। ওইসময় সাদা পোশাকে পুলিশের লোকজন এসে তাকে আটক করে। এরমধ্যে লোকজন জড়ো হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে কৌশলে বেলাল পালিয়ে যায়। এখানে কেউ তাকে ছিনিয়ে নেয়নি। ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি বলেন, এক আসামিকে কয়েকজন লোক পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় এসআই সাদেকুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ৪০-৫০ জনের নামে মামলা করেছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।