শীতের তীব্রতা বাড়ায় ঈশ্বরদীতে ধুম পড়েছে গরম কাপড় কেনার

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা:
ঈশ্বরদীসহ আশেপাশের এলাকায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় সর্বত্রই শীতে জবুথবু অবস্থা। গত ৫ দিন ধরে ঈশ্বরদীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস বিরাজ করছে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর ) ঈশ্বরদীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি রেকর্ড হয়েছে। এর আগে শুক্রবার ঈশ্বরদীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে একটু অস্বস্তিতে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষগুলো। তাই উষ্ণতা পেতে তারা ঝুঁকেছেন পুরাতন কাপড়ের দিকে। ঈশ্বরদীর বিভিন্ন স্থানে পুরাতন গরম কাপড়ের ব্যবসাটা বেশ জমজমাট।
গত কয়েক দিনে বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে পুরাতন কাপড় বিক্রির ধুম পড়েছে। বিশেষ করে এর ক্রেতা হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। বিভিন্ন রিক্সা বা ভ্যানচালক, বিভিন্ন শ্রমিকরা দেদারছে এই কাপড় কিনে নিজেদের উষ্ণ রাখার চেষ্টা করছেন। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে কর্মরত বিদেশীদেরও পুরাতন জ্যাকেটসহ শীতের কাপড় কিনতে দেখা গেছে। পুরাতন কাপড়ের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন এই সেক্টরের বিশেষ করে রেলওয়ে মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও। বিকিকিনি আগের চেয়ে বৃদ্ধির কারণে বেশ স্বস্তিতে আছেন ব্যবসায়ীরা। ঈশ্বরদীর ফুটপাতেরও নিম্ন আয়ের মানুষ একটু সস্তায় কিনছেন পুরনো কাপড়।

ঈশ্বরদীর বিভিন স্থানে পুরাতন কাপড়ের মধ্যে সোয়েটার, জ্যাকেট, কম্বল, গরম টুপি, ছোট ও বড়দের বেøজার, বিভিন্ন ডিজাইনের মাফলার বিক্রি করতে দেখা গেছে। দামও খুব সাধ্যের মধ্যে। বিভিন্ন ধরনের জ্যাকেট, ৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যায়। এছাড়াও বিভিন্ন মোটা গেঞ্জি, সোয়েটার, চাদর পাওয়া যায় ১০০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যেই। রেলওয়ে মালগুদাম এলাকায় ভাসমান বিক্রেতা আরজু বলেন, এই কাপড়গুলো কমদামে না বেচলে কাস্টমার পাওয়া যায় না। সব কাস্টমার আবার এসব কিনেও না বলেও জানান তিনি। রেলওয়ে মার্কেটের বিক্রেতা নূরু বলেন, বিভিন্ন হকার রিক্সাচালক যাদের আয় কম তারাই কিনে থাকে। এসব কাপড় পুরনো হলেও বেশ আরামদায়ক বলেও জানান তিনি।

ঈশ্বরদীর বিভিন্ন জায়গায় ফুটপাত জুড়ে গরম কাপড়ের ব্যবসা জমজমাট। কথা হয় ক্রেতা রমজান হোসেনের সাথে। মাত্র ১২০ টাকায় কিনেছেন একটি লম্বা জ্যাকেটের আদলে গরম কাপড়। তিনি বলেন, ‘সারাদিনে আমাদের রিক্সা চালিয়ে যা আয় হয় এই কাপড় কিনে এক দুই হাজার টাকা খরচ করতে চাই না। শীত কমানো দরকার তাই কিনলুম।’

দশতলার সামনের বিক্রেতা বাবলু বলেন, এই সব পোশাক কিনতে প্রতি পিস খরচ হয় মানভেদে ৫০ থেকে ১২০ টাকা। আমরা প্রতি কাপড়ে ২০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত লাভ করে থাকি। অনেক সময় পুরাতন কাপড় কিনে ওয়াশ করতে হয় বলেও জানান তিনি। শুধু পুরুষরাই নয় বিভিন্ন বাসায় খেটে খাওয়া কাজের মেয়ে, বুয়াদেরও ভরসা এই কাপড়।

ব্যবসায়ী আনসার আলী বলেন, আমারা চট্টগ্রাম থেকে এনে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করে থাকি। প্রতিবছরই শীতের মৌসুমে তাইওয়ান, কোরিয়া ও জাপান থেকে শীতের কাপড় আমদানি হয়। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে এসব পুরাতন কাপড় সংগ্রহ করে ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে বিতরণ করে থাকে।