আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর দাফন আজ (১৭ অক্টোবর) বিকেলে সম্পন্ন হয়েছে। দুই দফা জানাজা শেষে মতিয়া চৌধুরীকে মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার স্বামী বজলুর রহমানের কবরে শায়িত করা হয়।
মতিয়া চৌধুরী গত বুধবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে দাফনের জন্য শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নতুন জায়গা চাওয়া হয়েছিল। তবে সিটি করপোরেশন তাতে সাড়া না দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত স্বামীর কবরে তাকে দাফন করা হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে মতিয়া চৌধুরীর কফিন রাজধানীর রমনা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের বাসভবনে নেওয়া হয়। সেখানে প্রথম জানাজায় পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা অংশ নেন। এ সময় আওয়ামী লীগের ব্যানারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
বাদ জোহর রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে তার দ্বিতীয় জানাজা হয়। জানাজার আগে মতিয়া চৌধুরীর জন্য সবার কাছে দোয়া চান তার ভাই মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী। পরে মসজিদের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার কফিনে আলাদাভাবে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।
মতিয়া চৌধুরীর জন্ম পিরোজপুরে, ১৯৪২ সালের ৩০ জুন। তাঁর বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মতিয়া চৌধুরী।
মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসন থেকে ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৬ ও ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মতিয়া চৌধুরী। ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে তিনি জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরও তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অধিকাংশ নেতা আত্মগোপনে থাকায় জানাজায় দলটির কোনো পর্যায়ের নেতাকে দেখা যায়নি। তবে দলটির সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতা এবং আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কিছু কর্মী জানাজায় অংশ নেন। জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তবে মতিয়া চৌধুরীর জানাজাকে ঘিরে দুই স্থানেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি চোখে পড়েনি।