বাংলাদেশ চারবার স্বাধীন হয়েছে, কিন্তু বৈষম্য দূর হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির ও শায়েখে চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজবাড়ীর ১নং রেলগেটে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, এ দেশ চারবার স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীনতা অর্জন করলেও আমাদের থেকে বৈষম্য দূর হয় নাই। একাত্তরে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, কিন্তু আমরা এগুলো ভুলে গিয়ে ভারতের নীতি আদর্শ গ্রহণ করেছিলাম। সুতরাং ভারতের সংবিধানে যে চারটি মূলনীতি রয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধানে সে মূলনীতি গ্রহণযোগ্য নয়।
পুঁজিবাদী অর্থনীতি মানুষকে মুক্তি দিতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, যতদিন ইসলামী অর্থব্যবস্থা দিয়ে দেশ পরিচালিত না হবে, ততদিন এ দেশের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না। বিগত দিনে আমরা আওয়ামী লীগের শাসন দেখেছি, বিএনপির শাসন দেখেছি, জোটের শাসন দেখেছি, এরশাদের শাসন দেখেছি, কিন্তু কোনো দুর্নীতি কমে নাই, মানুষের ভাগ্যে কোনো পরিবর্তন হয় নাই।
মুফতি ফয়জুল করীম আরও বলেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রত্যেক ভোটারের ভোটের মূল্যায়ন হয়। কোনো ভোট বিফলে যায় না। নির্বাচনে যে দল মোট প্রদত্ত ভোটের যত শতাংশ পাবে, সেই অনুপাতে সংসদে প্রতিনিধি পাঠাতে পারবে। বিশ্বের অনেক দেশে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতি অনুসরণ করছে। অনেক আগেই আমরা প্রস্তাব রেখেছিলাম। আমরা ধারাবাহিকভাবে এ দাবিতে আন্দোলন করে আসছি দীর্ঘদিন থেকে।
তিনি বলেন, বিগত ২০০৮ সালের নির্বাচন থেকে নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবি নিয়ে মাঠে কাজ করছে। এটা করলে ছোট দলগুলো আর বৈষম্যের শিকার হবে না। পিআর সিস্টেমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করলে মনোনয়ন বাণিজ্য ও দুর্নীতিও থাকবে না। প্রতিটি ভোটের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হবে। মানুষের ভোটের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হলে দেশ গড়ায় তারা আরও উৎসাহিত হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজবাড়ী জেলা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলটির রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি মুফতি শামসুল হুদা। তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে মানুষ দিশেহারা। সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করে জনগণকে বাঁচাতে হবে। যানজট কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। পতিত সরকারের প্রেতাত্মা এখনও বিভিন্ন প্রশাসনে বসে ষড়যন্ত্র করছে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের কঠোরভাবে বয়কট করতে হবে।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন জেলার সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মাদ সাব্বির হুসাইন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, মাওলানা আমিনুল ইসলাম কাসেমী, কারি আবু ইউসুফ, মুহা. আ. রহিম সুমন, ছাত্রনেতা আ. রহমান সোহান, আ. আলিম, যুবনেতা রফিকুল ইসলাম মিলন, হাফেজ আব্দুল্লাহ, মাওলানা সিদ্দুকুর রহমান, মাওলানা আ. মালেক, মুফতি রইস উদ্দিন প্রমুখ। এ ছাড়াও সমাবেশে জেলা, উপজেলা ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।