সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল

 কামরুল হাসান, টাংগাইল পতিনিধিঃ  ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে শীত বিদায়ের লগ্নে প্রকৃতি বদলের সঙ্গে সঙ্গে সবুজ পাতার ফাঁকে এখন আমের সোনালি মুকুলের ছড়াছড়ি। সারি সারি আমের গাছে এখন ছড়াচ্ছে ঘ্রাণ। সবুজ পাতা ভেদ করে বেরিয়ে আসছে আম চাষিদের সোনালী স্বপ্ন। আম চাষিরাও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার আমের ভালো ফলনের আশা করছেন কালিহাতী উপজেলার কৃষকরা।
পথ-ঘাট, মাঠ-প্রান্তর, বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মন্দির যেখানেই চোখ পড়বে দৃষ্টি সড়ানো যাবেনা থোকা থোকা আমের মুকুলের মনকাড়া সৌন্দর্য্য থেকে, আর মন মাতাল করা আমের মুকুলের মৌ মৌ ঘ্রাণে বিমোহিত-মুগ্ধ হবেই মন। মন যেন এখনই মধুমাস জৈষ্ঠের অপেক্ষায় পাগলপারা।
জানা যায়, উপজেলার প্রতিটি সর্বত্র এলাকাজুড়ে এখন গাছে গাছে শুধু আমের মুকুল আর মুকুল। মুকুলের ভারে যেন নুয়ে পড়ছে প্রতিটি আম গাছ। আর মৌমাছিরা আসতে শুরু করেছে মধু আহরণে। রঙ্গিণ ফুলের সমারোহে যেমন সেঁজেছে প্রকৃতি তেমনি বর্ণিল নতুন সাঁজে সেঁজেছে কালিহাতী উপজেলার সকল আম বাগানগুলো। ভরপুর আমের মুকুল আর মৌ মৌ ঘ্রাণে মনে জানান দিচ্ছে মধুমাস জৈষ্ঠ।
কৃষিবিদ ও আমচাষীরা আশা করছেন, বড় ধরণের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সেই সাথে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমের ফলন বেশ ভাল হবে। আমচাষী ও বাগান মালিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগান পরিচর্যায়। অবশ্য মুকুল আসার আগে থেকেই গাছ পরিচর্যা করছেন তারা। গাছে গাছে বালাইনাশক স্প্রে করার দৃশ্যও চোখে পড়েছে। কালিহাতী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বাণিজ্যিকি ভিত্তিতে আম চাষ না হলেও ব্যক্তি উদ্দ্যোগে বাসা-বাড়ি, বাগানসহ এ বছর উপজেলায় প্রায় ৬৬৫ হেক্টর জমিতে আম বাগান তোলা হয়েছে। বাগানগুলোতে আম্রপালি, ফজলি, খিড়সা, মোহনা, ল্যাংড়া, রাজভোগ, গোপালভোগসহ বিভিন্ন জাতের আম চাষ করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিটি বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ আঙ্গিনায় অনেক অগণিত আমগাছ মুকুলে মুকুলে ছেঁয়ে গেছে। এ বছর উৎপাদিত আম উপজেলার প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কালিহাতী উপজেলার ফুলতলা গ্রামের সফল আম চাষী জুয়েল জানান, ১০ বিঘা জমিতে তিনি আম্রপালি, ফজলি, খিড়সা, মোহনা, ল্যাংড়া, রাজভোগ, গোপালভোগ, মল্লিকা, চোষাসহ বিভিন্ন জাতের আম চাষ করে বছরে প্রায় ৩-৪ লাখ টাকা আয় করেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আম বাগান মালিকরা জানান, প্রতিটি গাছই মুকুলে ভরে গেছে। বড় ধরণের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে সেই সাথে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমের ফলন বেশ ভাল হবে। প্রতিবছরই তারা আম চাষ করে অনেক টাকা আয় করে থাকেন।
এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারহানা বিজনেস আইকে বলেন, আম চাষীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষন ও নিরাপদ বিষমুক্ত আম চাষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আম চাষীদের আমগাছে মুকুল আসার আগে এবং আমের গুটি হবার পর নিয়মিত ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জৈব বালাইনাশক, কীটনাশক ও ফেরোমেন ফাঁদ ব্যবহার করে আমসহ অন্যান্য ফল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বড় ধরণের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং সেই সাথে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমের ফলন বেশ ভাল হবে বলে আশা করছেন তিনি।
preload imagepreload image