নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের সুমাইয়া হোসেন শামা এবারের মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় পাবনা মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েও অর্থ সংকটে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা সুমাইয়া জানান, তার বাবা শাহাদত হোসেন ২০০৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত স্থানীয় একটি নন এমপিও নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসাবে বিনা বেতনে চাকুরি করেছেন। রাজনৈতিক কোন্দলে ২০২০ সালে বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে গেছে। তারপর থেকে বয়স না থাকায় আর কোন চাকুরী না পেয়ে তার বাবা বাড়িতে জ্বালানি কাঠ কেটে শুকিয়ে বাজারের বিভিন্ন হোটেল ও চায়ের দোকানে বিক্রি করে সংসার চালান। স্থানীয় ছাতনী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতার পাশাপাশি নিজে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের প্রাইভেট পড়িয়ে সুমাইয়া নিজের পড়া লেখার খরচ চালিয়েছেন। সুমাইয়ার বাবা শাহাদত হোসেন জানান, নিজের কোন সহায় সম্পত্তি নেই, শশুরের দান করা এক খন্ড এনিমি সম্পত্তিতে তারই করে দেয়া দুই কক্ষের একটি বাড়িতে স্ত্রী ও দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে তাদের বসবাস। সুমাইয়ার মা শামিমা আকতার বলেন, নিজেরা স্বামী-স্ত্রী খেয়ে না খেয়ে, সকল সুখ বিসর্জন দিয়ে মেয়েকে এই পর্যন্ত পড়ালেখা শিখিয়েছেন। এখন মেডিকেল কলেজে পড়ানোর মত আর্থিক সক্ষমতা তাদের নেই।
তাই সমাজের হৃদয়বান কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে না আসলে সুমাইয়ার চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করার ইচ্ছা শুরুতেই শেষ হয়ে যেতে পারে।
সুমাইয়া হোসেন শামা বলেছেন, তিনি লেখা পড়া শেষ করে একজন ভালো চিকিৎসক হওয়ার পাশাপাশি ভালো মানুষ হিসেবে সমাজের দরিদ্র অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চান।