স্বাধীন সামরিক বাহিনী সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অবিচারের সমাধান করে স্বাধীন সামরিক বাহিনী সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. হাসান নাসিরসহ ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।

রোববার (১২ জানুয়ারি) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আশরাফ উদ্দিনকে দেওয়া স্মারকলিপিতে এ দাবি জানায় প্রতিনিধি দলটি।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অন্যায্য পদোন্নতি ও বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অবসরসহ আর্থিক বা সামাজিক হয়রানি করা হয়েছে দাবি করে স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দীর্ঘকাল ধরে গুরুতর অবিচার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়ে আসছেন। এই অবিচারের কারণে তাদের পেশাগত জীবন ও ব্যক্তিগত জীবনে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে এমন অবিচারের প্রতিকার এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে, আমরা একটি স্বাধীন সামরিক সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করছি।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে পুরোনো সামরিক আইন ব্যবহৃত হচ্ছে যা আধুনিক পরিস্থিতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। সংবিধানের ৪৫ অনুচ্ছেদ সামরিক সদস্যদের ন্যায়বিচারের সুযোগকে সীমিত করেছে এবং সামরিক বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।

এজন্য সামরিক বিচার পর্যালোচনা, ২০০৯ সাল থেকে সমস্ত বিতর্কিত বরখাস্ত এবং কোর্ট মার্শাল পর্যালোচনা করা, যারা অবিচারপূর্ণভাবে পদচ্যুত হয়েছেন, তাদের পদোন্নতিসহ সব ধরনের আর্থিক সুবিধা প্রদান করা, যাদের অবিচারে বরখাস্ত করা হয়েছে তাদের পুনর্বহাল করা, পুনর্বহালকৃত কর্মকর্তাদের সরকারি বা সামরিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিয়োগ দেওয়াসহ অবিচারের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান হাসান নাসির।

একইসঙ্গে পুরোনো সামরিক আইন ও বিধি বাতিল করে নতুন আইন প্রবর্তন, সামরিক সদস্যদের ন্যায়বিচারের সুযোগ বৃদ্ধি করতে সংবিধানের ৪৫ অনুচ্ছেদ সংশোধন ও সামরিক বিচার ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার দাবি জানান তিনি।

এছাড়াও স্বাধীন সামরিক বাহিনী সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয় প্রতিরক্ষা সচিবকে দেওয়া স্মারকলিপিতে।

সেখানে আরও বলা হয়, সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ন্যায্য অধিকার এবং তাদের পেশাগত জীবনকে সম্মানিত করা ও বিদ্যমান আইন সংস্কার করে নতুন আইন প্রবর্তন করার জন্য একটি স্বাধীন কমিশন অত্যন্ত জরুরি। এই কমিশন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, মানবাধিকার কর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রাক্তন ও বর্তমান সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে।