তিন সপ্তাহ কারাভোগের পর ইতালীয় সাংবাদিক সিসিলিয়া সালাকে মুক্তি দিয়েছে ইরান। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির কার্যালয় বুধবার এ খবর নিশ্চিত করেছে।
ইতালীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, গত ১৯ ডিসেম্বর তেহরানে গ্রেফতার হওয়ার পর সালাকে জেল থেকে মুক্ত করাতে সফল হয়েছে ইতালি। ইরান অবশ্য এই গ্রেফতারের পেছনে রোমে আটক ইরানি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আবেদিনির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
এদিকে সাংবাদিক সিসিলিয়া সালার মুক্তির খবরটি ইতালিতে উচ্ছ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়।
এ নিয়ে এক পোস্টে প্রধানমন্ত্রী মেলোনি লেখেন, ‘সিসিলিয়ার ফিরে আসা সম্ভব করতে যারা কাজ করেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি এখন তার পরিবার ও সহকর্মীদের সঙ্গে মিলিত হতে পারবেন’।
সেই সঙ্গে তিনি এও উল্লেখ করেছেন, সিসিলিয়ার মুক্তির খবরটি ইতোমধ্যেই তার মা-বাবাকে জানানো হয়েছে।
২৯ বছর বয়সি সিসিলিয়া সালা ইতালির ‘ইল ফোগ্লিও’ সংবাদপত্রে কর্মরত একজন সাংবাদিক। তিনি তেহরানের খ্যাতনামা ইভিন কারাগারে আটক ছিলেন। নিয়মিত সাংবাদিক ভিসায় ইরানে কাজ করছিলেন তিনি।
গত ১৬ ডিসেম্বর ইরানি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আবেদিনিকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গ্রেফতারি পরোয়ানার ভিত্তিতে মিলানের মালপেনসা বিমানবন্দরে আটক করা। এর তিন দিন পরেই তেহরানে গ্রেফতার হন ইতালীয় সাংবাদিক সিসিলিয়া।
তবে উভয়ের গ্রেফতারের মধ্যে কোনো যোগসূত্র নেই বলেই দাবি করেছে তেহরান।
ইরানি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ড্রোন প্রযুক্তি সরবরাহ করেছিলেন। যা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জর্ডানে একটি মার্কিন ঘাঁটিতে আক্রমণে ব্যবহৃত হয়।
কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ও গুজব
মেলোনির কার্যালয় জানিয়েছে, ইতালির কূটনৈতিক ও গোয়েন্দা চ্যানেলের মাধ্যমে সাংবাদিক সিসিলিয়া সালার মুক্তি সম্ভব হয়েছে।
তবে ইতালির কিছু সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মেলোনির মধ্যে আলোচনাতেই সিসিলিয়া সালার মুক্তির ইঙ্গিত ছিল। যদিও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
এদিকে সাংবাদিক সিসিলিয়া সালার মুক্তি ইরানের পশ্চিমা বন্দিদের ব্যবহার করে বন্দি বিনিময় নিয়ে আগের অভিযোগগুলোকে আবারও সামনে এনেছে।
অতীতে ইরান এমন বন্দি বিনিময়ের জন্য অভিযুক্ত হয়েছে। ২০২৩ সালে পাঁচ আমেরিকান নাগরিকের বিনিময়ে ইরান কয়েকজন ইরানি বন্দিকে মুক্ত করে। একই সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার হাতে জমে থাকা ৬ বিলিয়ন ডলার অর্থ ফেরত আনতে সক্ষম হয়।
তবে সিসিলিয়া সালার মুক্তি কূটনৈতিক চাপ ও আলোচনার মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন বলে মনে করছে ইতালি। সূত্র: আল-জাজিরা