মুড়ি খেলে ওজন কমবে

জলখাবার হিসেবে মুড়ি খেতে সবাই পছন্দ করেন। বিশেষ করে ডায়াবেটিসের রোগীদের কাছে মুড়ি খুব জনপ্রিয়। সকাল-বিকালের নাশতায় সেহজ উপায় হিসেবে তারা মুড়িকেই বেছে নেন। তবে মুখরোচক খাবারের পাশাপাশি মুড়িতে কতটা পুষ্টিগুণ রয়েছে, সে সম্পর্কে জানেন না অনেকেই।

মুড়ি সম্পর্কে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়েছেন জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. শিমু আক্তার। চলুন জেনে নেই-

ওজন কমাতে: যারা ওজনের ব্যাপারে সচেতন, তাদের জন্য মুড়ি একটি ভালো খাবার হতে পারে। কারণ, মুড়ি কম ক্যালরি এবং কম চর্বিযুক্ত খাবার। ১৫ গ্রাম মুড়িতে মাত্র ৫৪ ক্যালরি আছে। শুধু তা–ই নয়, প্রচুর ফাইবার থাকার কারণে মুড়ি খেলে অনেক সময় পর্যন্ত পেট ভরা থাকে। মুড়িতে ভিটামিন বি, ম্যাগনেশিয়াম ও জিংক আছে।

গ্যাসের সমস্যায়: বিভিন্ন খাবার খাওয়ার কারণে অনেক সময় বুক জ্বালাপোড়াসহ গ্যাসের সমস্যা হয়। মুড়ি সেসব ক্ষেত্রে ভালো সমাধান হতে পারে। বিশেষ করে মুড়ি পানিতে ভিজিয়ে খেলে গ্যাসের সমস্যার দ্রুত সমাধান হয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে: মুড়িতে প্রচুর ফাইবার আছে। সুতরাং যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তাদের জন্য মুড়ি খুব উপকারী।

হাড় শক্ত করে: মুড়িতে প্রচুর ক্যালসিয়াম, আয়রন ও অল্প পরিমাণ ‘ভিটামিন ডি’ বিদ্যমান, যা হাড় শক্ত করতে খুবই প্রয়োজনীয়।

ত্বকের যত্নে: বয়সের ছাপ নিয়ে কমবেশি সবাই চিন্তিত হয়। এ ক্ষেত্রে একটি উত্তম সমাধান হতে পারে মুড়ি। কারণ, মুড়িতে রয়েছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যার প্রভাবে আল্ট্রাভায়োলেটের কারণে ত্বকের যে ক্ষতি হয়, তা সহজেই রোধ করা যায়।

যাদের সতর্ক হতে হবে
ডায়াবেটিসের রোগী: অনেক ডায়াবেটিসের রোগীর কাছে নাশতা হিসেবে মুড়ি খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু অনেকেই জানেন না মুড়িতে বেশ শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট আছে। মুড়ির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি ও মুড়ি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। তবে প্রচুর ফাইবার থাকায় এবং ক্যালরি কম থাকায় মুড়ি নাশতা হিসেবে অল্প পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে। ব্রাউন মুড়ি বা লাল চালের মুড়ি অপেক্ষাকৃত ভালো।

কিডনিজনিত সমস্যা: ডায়াবেটিসের রোগীদের মতো যারা দীর্ঘদিন কিডনিজনিত রোগে আক্রান্ত, তারাও মুড়ি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কারণ, মুড়িতে প্রচুর পরিমাণ সোডিয়াম আছে, যা কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীর জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপের রোগী: মুড়িতে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম থাকায় রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। এ কারণে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে ও যারা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন, তারা মুড়ি খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

বাজারের মুড়িতে বিভিন্ন ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান, যেমন আর্সেনিক, ইউরিয়া মেশানো থাকে, যা নানান স্বাস্থ্য সমস্যাসহ রোগীর মৃত্যুর কারণও হতে পারে।