সাকিব আল হাসানের বিষয়ে কোনো সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। দেশে ফিরে বিপিএল খেলবেন কি না, সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলবেন কি না, সবই ঝুলে আছে। সাকিব সমাধান চান বিসিবি থেকে আর বিসিবি বলছে সমাধান সাকিবের কাছেই। এই নিয়ে চলছে টানাহেঁচড়া।
গতকাল বিসিবির ১৬তম বোর্ড মিটিং শেষে সাকিবের বিষয়ে কথা বলেছেন সভাপতি ফারুক আহমেদ। সাকিব ছাড়াও তামিম ইকবালকে নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। এছাড়া বিপিএল ও দেশের ক্রিকেটের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছে এই মিটিংয়ে।
সাকিবের বিষয়ে ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘সাকিবের ইস্যুটা আলাদা একটা ইস্যু, নতুন কিছু না। ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলার মতো মানসিক অবস্থায় সে ছিল না। এখন সাকিব বলবে বিপিএল খেলবে কি না। আমার হাতে কিছু নেই। আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে রাজি নই। আর আমার কাছে সাকিবের বিষয়ে কোনো আপডেট নেই।’
এই কথার মাধ্যমে বিসিবি সভাপতি বার্তা দিয়েছেন সাকিবের সিদ্ধান্ত সাকিবের হাতে। তবে সাকিবও সবুজ সংকেত না পেয়ে দেশে ফিরতে রাজি নন। সাকিবের পাশাপাশি তামিমের প্রসঙ্গও এসেছে ফারুকের কথায়। দেশসেরা ওপেনার চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলবেন কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো বার্তা নেই। এর আগে জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু জানিয়েছিলেন, তামিম নিজেকে প্রমাণ করতে পারলে অবশ্যই বিবেচনায় রাখা হবে। গতকাল ফারুকের কণ্ঠেও একই সুর শোনা গেছে। তামিমকে নিয়ে ফারুক বলেছেন, যদি কোনো খেলোয়াড় অবসর না নেন, তাহলে তিনি নির্বাচকদের নজরে অবশ্যই থাকবেন।
এবারের বোর্ড মিটিংয়ে বিপিএল ছিল আলোচনার মূলে। এবার বিপিএলের উন্মাদনার পারদ সব জায়গায় ছড়িয়ে দিতে সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সারদের শরণাপন্ন হয়েছে বিসিবি। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বিপিএলের ট্রফি ঘুরবে ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামে। এই তিন শহরেই থাকছে মিউজিক ফেস্ট। যার জন্য মধুমতি ব্যাংক দিয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা।
বিপিএল নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনার মধ্যে অন্যতম ক্রিকেটারদের টাকা বকেয়া নিয়ে। গেল আসরে যাদের টাকা বকেয়া রয়েছে তাদের ২৫ শতাংশ করে দিচ্ছে বিসিবি, জানিয়েছেন ফারুক। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে এবার জামানতের টাকার পরিমাণ কমানো হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। এছাড়া বোর্ড ও ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর স্পন্সরেও রয়েছে কিছুটা জটিলতা। সেগুলো সমাধানের কথা ভাবছে বিসিবি।
সম্প্রতি অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জেতা দলের প্রত্যেককে ৩ লাখ করে টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গতকালের আলোচনায়। এছাড়া পুরুষদের মতো নারী ক্রিকেটেও কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে বছরে ৩০ জনের সঙ্গে চুক্তি করার পরিকল্পনা করেছে বিসিবি। আর নারীদের জন্য উইনিং বোনাস চালু করা হয়েছে। ফারুকের মতে, পুরুষদের তুলনায় নারীদের টাকার অঙ্ক কম-বেশি হতে পারে। তবে তারা বোনাস পাবে। এই বোনাস দেওয়া হবে বিভিন্ন ধাপে। র্যাংকিংয়ের ওপরের দিকে থাকা দলগুলোকে হারাতে পারলে বোনাস হবে এক রমক, আর নিচের দলগুলোকে হারাতে পারলে বোনাস হবে কিছুটা কম। পুরুষ ক্রিকেটাররাও এভাবে বোনাস পেয়ে থাকেন।
এ দিকে বিসিবির স্ট্যান্ডিং কমিটি নিয়েও কথা হয়েছে। ফারুকের মতে, এই মুহূর্তে পরিচালক রয়েছেন মাত্র ১০ জন। তাদের নিয়েই করা হয়েছে স্ট্যান্ডিং কমিটি। একজনের ওপরে তিন-চারটা কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পরিচালকদের কাছ থেকে ফিডব্যাক জানতে চাওয়া হয়েছে। সেটি জানতে পারলে এক সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। এই বিষয়ে বিসিবি সভাপতি বলেছেন, ‘এর আগে অনেক বার বলেছি হয়নি, এবার কনফার্ম হবে।’