কল্পনাকে হত্যার পূর্বে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল প্রতিবেশি চাঁচা

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি

পাবনার চাটমোহরের শিশু কল্পনা (৯) হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটন হয়েছে। হত্যার পূর্বে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টাও করেছিল প্রতিবেশি চাঁচা নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল (১৭)। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) জেলা পুলিশ পাবনার সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিং কালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চাটমোহর থানা ও ডিবি পুলিশ।

হত্যাকান্ডের শিকার কল্পনা চাটমোহরের গুনাইগাছা ইউনিয়নের চরমথুরাপুর ওয়াপদা বাঁধ এলাকার আলাল হোসেনের মেয়ে এবং চরপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল চরমথুরাপুর গ্রামের আনিছুর রহমান মল্লিকের ছেলে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ডিবি পুলিশের সহায়তায় চাটমোহর থানা পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামালকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।

অভিযুক্ত নুরুজ্জামান মল্লিক ওরফে নুরজামাল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে পুলিশকে জানিয়েছে, গত ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গুড়া উপজেলার দহপাড়া খানকা শরীফের ইসলামি জালসায় গিয়ে ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে রাত সাড়ে সাত টার দিকে গাজা সেবন করে বাড়ির উদেশ্যে রওনা দেওয়ার সময় স্কুল মাঠের কোনায় নাগরদোলার পাশে কল্পনাকে বসে থাকতে দেখে। কল্পনাকে বাড়ি পৌছে দেওয়ার কথা বলে ভুল পথে নিয়ে পৈলানপুর মাঠের মধ্যে মোহাম্মদ আলীর লিচু বাগানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ভয়ে এবং বাড়ি পৌছে দিতে কল্পনা কান্নাকাটি শুরু করে। কান্নার শব্দ শুনে লোকজন এগিয়ে আসতে পারে এ আশংকায় গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধে কল্পনাকে হত্যার চেষ্টা করে অভিযুক্ত নুরজামাল। মৃত্যু নিশ্চিত করতে এবং ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে কল্পনার পড়নের পায়জামা খুলে গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পুনরায় ইসলামি জালসায় চলে যায় নুরজামাল।

উল্লেখ্য, গত ১৪ ডিসেম্বর শনিবার সকালে এলাকাবাসী গুনাইগাছা ইউনিয়নের পৈলানপুর মাঠের মধ্যে লিচু বাগানে কল্পনার মৃতদেহ পরে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। দুপুরের দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে ১৪ ডিসেম্বর চাটমোহর থানায় একটি মামলা হয় (মামলা নং ০৫)। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং পুলিশ সুপার মোরতোজা আলী খাঁনের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) কাজী শাহনেওয়াজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) রেজিনুর রহমান, সহকারি পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) আরজুমা আক্তার এর তত্ত্বাবধানে চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ মনজুরুল আলম,ওসি ডিবি পাবনার নেতৃত্বে এস আই বেনু রায় (নিঃ) ও মামলার তদন্তকারী অফিসার এস আই শামসুল আলম হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেন।