পরিবেশগত সংকটাপন্ন সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক বা নাগরিকদের যাতায়াত ও অবস্থানে বিধিনিষেধ আরোপ করা সংক্রান্ত সরকারের সিদ্ধান্ত প্রশ্নে রুল জারি করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারসহ (এসপি) সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রুল জারি করে আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আমির হোসেন ও মো. উজ্জল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।
পরিবেশগত সংকটাপন্ন সেন্টমার্টিন দ্বীপে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন ও একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের দূষণ নিয়ন্ত্রণে পাঁচ দফা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বিষয়ে গত ২৮ অক্টোবর স্মারক জারি করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় (পরিবেশ শাখা-২)। অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়ে দ্বীপে নৌযান চলাচলের অনুমতি দেবে, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে রাত্রি যাপন করা যাবে না, পর্যটকের সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি হবে না এবং সৈকতে রাতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি করা ও বারবিকিউ পার্টি করা যাবে না বলে সিদ্ধান্তে উল্লেখ করা হয়।
ওই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট এ এন এম হেলাল উদ্দিন গত ২১ নভেম্বর রিটটি দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন আদালত।
এ বিষয়ে আইনজীবী উজ্জল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, গত ২৮ অক্টোবর ওই মেমো (স্মারক) জারি করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় (পরিবেশ শাখা-২)। এটি সংবিধানের ৩৬ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি। অনুচ্ছেদটিতে চলাফেরার স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। তবে দেশের জনগণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হলে তা আইন দিয়ে আরোপিত বিধিনিষেধ সাপেক্ষে হতে হয়। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মেমোটি আইন নয়। মূলত এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত রুল দিয়েছেন।
গত ২৮ অক্টোবরের ওই সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবী উজ্জল হোসেন।