টমেটোর এই পুষ্টিগুণগুলো জানেন?

টমেটো তাজা, রসালো, মিষ্টি এবং সামান্য টক জাতীয় ফল যেটি সাধারণত সবজি হিসেবেই বেশি পরিচিত। এটি সালাদ, স্যুপ, রান্না করা খাবার, সস এবং পিউরির মতো বিভিন্ন রূপে ব্যবহার করা যায়। রান্না করা টমেটোতে লাইকোপিনের শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা শরীরের জন্য উপকারী। টমেটোতে ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান রয়েছে যা স্বাস্থ্যকর।

টমেটোর উপকারিতা:

টমেটোর স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় টমেটো অন্তর্ভুক্ত করলে রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা হ্রাস পায়। টমেটো পোস্টপ্র্যান্ডিয়াল লিপেমিয়া প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে এবং এটি করার ফলে এথেরোসক্লেরোসিস হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়। এ ছাড়া নিয়মিত টমেটো খেলে এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে।

অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহ হ্রাস:

টমেটো লাইকোপিন, বিটা-ক্যারোটিন, লুটেইন, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড এবং নারিনজেনিনসহ বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পূর্ণ। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি আমাদের শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের ফলে সৃষ্ট সমস্যা ঠিক করতে সাহায্য করে। দূষণ থেকে শুরু করে অতিবেগুনি রশ্মি অনেক কিছু এই অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণ হতে পারে। টমেটোতে লুটেইনও রয়েছে, যা বয়স-সম্পর্কিত ম্যাকুলার অবক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে। ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং টমেটোর ত্বকে থাকা নারিনজেনিন প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

একটি সুস্থ ইমিউন সিস্টেম তৈরিতে সাহায্য করে:

টমেটো শরীরের ভিটামিন সি এর দৈনিক চাহিদার ২৫% পূরণ করতে পারে। প্রতি ১০০ গ্রামে ১৩.৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ইমিউন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে এবং কোষ বৃদ্ধি এবং নিরাময় করে। ভিটামিন ই এর মতো শরীরের অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির তৈরি করাও ভিটামিন সি’র উপর নির্ভর করে।

অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে:

টমেটো অদ্রবণীয় ফাইবারে পূর্ণ, যা মলকে নরম করে। যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে তবে এটি বিশেষভাবে উপকারী। দ্রবণীয় ফাইবার থাকায় খাদ্যতালিকায় টমেটো অন্তর্ভুক্ত করলে এটি রক্তের গ্লুকোজ (চিনির) মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি কার্বোহাইড্রেটের হজম এবং শোষণকে ধীর করে দেয়, তাই রক্তে শর্করার মাত্রা খুব দ্রুত বাড়ে না এবং খাওয়ার পরে বেশি সময় ধরে পেট ভরা অনুভূতি দেয়। দ্রবণীয় ফাইবার আমাদের অন্ত্রে একটি প্রিবায়োটিক হিসাবেও কাজ করে। এছাড়া টমেটো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ও রক্ত এবং হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়ক।

কোষের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে:

টমেটোতে রয়েছে ফোলেট বা ভিটামিন বি৯। এটি টিস্যুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং কোষের কার্যকারিতা সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য বিশেষভাবে কাজ করে। যারা সন্তানসম্ভাবা নারী রয়েছে; তাদের জন্য ফোলেট গর্ভাবস্থায় ক্রমবর্ধমান ভ্রƒণের নিউরাল টিউব ত্রুটি প্রতিরোধে সহায়তা করে, যা সন্তানসম্ভাবা নারীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

শ্বাসযন্ত্রের উন্নয়ন:

টমেটোতে আছে লাইকোপিন, ক্যারোটিনয়েড যা ফুসফুস ভাল রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এছাড়া টমেটো ব্যায়ামের পর ক্লান্তি দূর করে, স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে, ত্বক ভালো রাখে, চোখ ভালো রাখে।