মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় শাপলা তুলতে গিয়ে ডোবায় ডুবে মাদ্রাসা পড়ুয়া দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার দীঘি ইউনিয়নের কয়রা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুরা হলো, উপজেলার দীঘি ইউনিয়নের কাগজিনগর গ্রামের প্রবাসী মো. বাবু কাজীর মেয়ে আনহা আক্তার (৭) ও একই ইউনিয়নের খরসতাই গ্রামের মো. রফিকুল সরদারের মেয়ে স্নেহা আক্তার (৭)।
নিহত দুই শিশু স্থানীয় কয়রা গ্রামের মাদ্রাসাতুল ওহি-আল ইসলামিয়ার কেজি ওয়ানের শিক্ষার্থী। তারা দুজনে বান্ধবী ছিল। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে নিহত দুই শিশুর মাদ্রাসায় পরীক্ষা ছিল। এজন্য দুজনেই সকালে বাড়ি থেকে পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় যায়। সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত চলে পরীক্ষা। এরপর চার থেকে পাঁচ শিশু মিলে নিহত শিশু আনহা আক্তারের বাড়িতে পোশাকসহ পরীক্ষার হার্ডবোর্ড রেখে কয়রা গ্রামের চকের একটি ডোবায় শাপলা তুলতে যায়। শাপলা ফুল তুলে ফেরার সময় নিহত দুই শিশু ডোবায় পড়ে যায়। সাঁতার না জানায় তারা ধীরে ধীরে পানিতে ডুবে যায়। পরীক্ষা শেষে তারা বাড়ি ফিরে না যাওয়ায় পরিবারের লোকজন তাদের খোঁজাখুঁজি শুরু করে।
এদিকে শাপলা তুলতে যাওয়া শিশুদের মধ্যে তানিসা নামের এক শিশু তার মায়ের কাছে ঘটনাটি বলে। এরপর ওই মাদ্রাসার দুই শিক্ষকসহ স্থানীয় লোকজন গিয়ে দুই শিশুকে ডোবা থেকে উদ্ধার করে আনহাকে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও স্নেহাকে সদর হাসপাতালে নেয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনা জানার পর সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
নিহত শিশু আনহার দাদা আবদুল হালিম বলেন, ‘আমরার নাতনি আজকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য মাদ্রাসায় যায়। পরীক্ষা শেষে বাড়ি না আসায় চিন্তায় পড়ে যাই। পরে স্থানীয় লোকজনের কাছে শুনতে পাই আমার নাতনি শাপলা তুলতে গিয়ে পানিতে পড়ে গেছে। নাতনি বাড়িতে ঠিকই আসল কিন্তু জীবিত না, লাশ হয়ে।’
কয়রা গ্রামের বাসিন্দা মো. লিটন খান বলেন, কয়েকজন শিশু মিলে কয়রা চকে শাপলা ফুল তুলতে গেছিল। যেখানে ফুল তুলতে ছিল তার পাশেই একটি ডোবা আছে। শুষ্ক মৌসুমে সেখানে ভেকু দিয়ে মাটি কেটেছিল। ফুল তুলে ফেরার সময় পাশের ডোবায় শিশু দুটি পড়ে গিয়েছিল।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, শিশু দুজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়, সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের অভিযোগ না থাকায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।