এনামুল হক টগর
বর্ষার ভাঙনে ভিটেহারা বসত বাড়ি ক্ষয় ক্ষতির সংসারে অসহায় জীবন।
অভার অনটনে দেহ কাঁদে বাঁচার অধিকার গ্রাম ছেড়ে এসেছি কর্মে নদী উজান।
পরবাসে বড় জ্বালা বধু কবে যে ফিরবো তোমার গৃহে ভালোবাসার মহৎ সংসার।
সামনে সাগর দরিয়া অসংখ্য নদী নালা খাল বিল পাড়ি দিয়ে উঠবো গাঁয়ের বাড়ি।
নদীতে তুখোর স্রোত তবুও কর্ম শেষে বৈঠা হাতে যাত্রা করবো আগামীকাল সকাল।
নিশি শেষে দিনের তাঁতানো রোদে সাগরের পূর্বাভাস গর্জন শুনি তুফান ঢেউ জটিল।
নৌকা ছাড়বো বধু শেকড়ের টানে বিশ্বাসে পৌঁছে যাবো নদীর বেলাভূমি সবুজ সরল।
প্রতিক্ষায় শ্যামল রমণী বেহুলার প্রেম মহুয়া সুন্দরী চেতনায় বালুকাবেলা চঞ্চল !
নদী কুলে শিমুল কাশফুল দূর বাগিচায় রক্তজবা ফুটে আছে শিউলি নির্মল।
দ্বিধাগ্রস্থ আলো আঁধারে কুল নাই কিনার নাই কতদূর যে ভালোবাসার আপন ঠিকানা।
পুষ্টিহীন দেহ তোমার মলিন দুঃখের সংসারে চোখে অশ্রু ঝরে সর্বদাই প্রেম দহন।
নদীর চারিদিকে অরক্ষিত ভূমি ফসলের যৌবনে মিশে আছে নিঃসঙ্গঁ স্মৃতি!
জগত জুড়ে মহামারী দূর্ভিক্ষ মৃত্যুর যন্ত্রণায় দেশ সমাজ পৃথিবী কাঁদে আহত বিক্ষত।
সময়ের সন্ত্রাসীরা আশার স্বপ্ন ভাঙে বাসনার সংসার ভাঙে জীবনের দূর্গতি।
গাঁয়ের অসৎ নেতা গভীর রাত জাগে টর্চলাইট হাতে তার হেঁটে যায় কৌশল ছলনার।
বুঝে না পেটের ক্ষুধা উঁকি দেয় পরের ঘরে লোভ লালসার মোহে আমিত্ব অহংকার।
পাশের বাড়ির বউটি ঋণের বোঝায় গলায় দড়ি দেয় মরণ অভাবে শরীর অঙ্গার।
আমি এক অতন্দ্র প্রহরী শত্রুর নীল ছোবলে দেহ জর্জর তবু আজন্ম বিপ্লবী সাহসী বীর!
লুটেরা দুষ্কৃতিকারীরা যদি আমাকে আক্রামণ করে তবে বিপদ তার আগুনে দাউ দাউ মৃত্যু।
কোন নতুন ঘাটে তুমি দাঁড়িয়ে আছো দরদী ভীষণ আসহায় জীবন চিত্ত!
জীবন নিরিবিলি প্রতিক্ষায় বিরহের প্রাণ কাঁদে ক্ষুধার জ্বালায় হাহাকার।
বর্ষায় দরিয়া কাঁদে দেহে কাঁদে যৌবন বাসনায় কাম কাঁদে প্রেমে কাঁদে দুটি নয়ন অঙ্গার।
গতকালও নৌকা ডুবিতে মরেছে মানুষ সাগর ছিল প্রবল উত্তাল ভারী বর্ষণে নদীর গর্জন।
বহুদূর বাড়ি আমার গহীন বালুচর পাড়ি দেবো থৈ থৈ নীল জল মাঝে মাঝে সমুদ্র নির্জন।
দূর সবুজ মাঠে রাখাল বাজায় বাঁশি মাছরাঙা ছোবল মাড়ে মাছ ধরে সে দৃশ্য দেখি।
যাত্রার দল গান গেয়ে বাড়ী ফিরে অথই দড়িয়ার পথ বেয়ে সামনে ভরা নদী সখি।
অসুখে দেহ কাঁদে অসহ্য জ্বালায় পরাণ বধু কাঁদে করুণ ব্যথায় কাঁদে প্রেমের দুটি আঁখি।
উজান দেশে বসে গতকালও ভেবেছি অমূল্য যৌবন তোমার চাঁদের জ্যোৎস্নায় মাখামাখি।
জমিনে বাহারী ফুল দাদার খানকায় আউলা বাতাস শরীর স্পর্শ করে মমতার মুখ।
পরাণ কাঁদে বধূ অভাবে এসেছি দূর পরবাসে কষ্টে পুড়ে পুড়ে দেহটা হয়েছে কঠিন অঙ্গার।
এমন করেই যদি কাটে দিন তবে জীবন ক্ষয়ে ক্ষয়ে যৌবন হবে তামাদী পতিত!
তখন কে দেবে ভালোবাসা সখি কে দেবে জীবন সংসার স্বপ্ন আশার দিন সুগতি?
কে দেবে প্রেম বধু অনাগত নতুন জন্ম বিজ্ঞ জ্ঞানের আর্দশ উত্তরসূরী দ্রুত?
বুধ কাঁদে অপেক্ষায় বধু কাঁদে প্রতিক্ষায় এবার ফিরলে বাড়ি জীবন প্রেমময়।
মাঝিরে বুকে বেঁধে রেখো সখি শত বছর ধরে শান্তির পথে পথে ভালোবাসার বিজয়।
০২/০২/২০২৫