এস.এম.রকি,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: সমাজের চারপাশে প্রায়ই দেখা যায় অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা পোশাকে থাকা কিছু মানুষ। তাঁরা মানসিক ভারসাম্যহীন কিংবা পাগল নামেই পরিচিত। রোদ, বৃষ্টি, কিংবা প্রচণ্ড শীতেও তাঁরা মানবেতর দিন কাটায়। অযত্ন, অবহেলা আর চিকিৎসার অভাবে সুস্থ মানুষের মতো জীবনযাপনের সুযোগ পাচ্ছেন না তাঁরা। উত্তরের জেলা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার এমন মানসিক ভারসাম্যহীনদের পাশে একদল যুবক। নিজ উদ্যোগেই নিজ অর্থায়নে স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলার ০৬ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার মানসিক ভারসাম্যহীনের পরিচ্ছন্ন করা, গোসল করানো এবং নতুন পোষাক ও শীতবস্ত্র প্রদানের কাজ করছে যুবকরা।
মহতি এই উদ্যোগের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন উপজেলার পাকেরহাট এলাকার যুবক ডেন্টিস্ট রেজোয়ানুল হক রাব্বী। তাঁর এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছেন অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী নাইম হাসান, শাকিল খান, সাগর ইসলাম ও বোরহান ইসলামসহ স্থানীয় যুবকরা।
জানা যায়, গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে এই কার্যক্রম শুরু করেন যুবকরা। এতে উপজেলার আংগারপাড়া গ্রামের এক মানসিক ভারসাম্যহীনকে পরিচ্ছন্ন করে নতুন রুপে তৈরী করা, মানসিক ভারসাম্যহীনদের নতুন পোষাক ও শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন এই কাজে সংশ্লিষ্ট যুবকরা।
শনিবার (৪ জানুয়ারী) দুপুর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২০ জন মানসিক ভারসাম্যহীনদের তালিকা সংগ্রহ করে ধারাবাহিক ভাবে এই কার্যক্রম বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছেন ওই যুবকরা।
নাইম হাসান বলেন, আমাদের সমাজে প্রায়ই এমন মানুষ দেখা যায়। অনেকে তাদের অবহেলার চোখে দেখে তাই আমরা কয়েকজন মিলে তাঁদের জন্য কিছু করার চিন্তা থেকেই এমন। যেন এটা দেখে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমাজের অন্যরাও উৎসাহিত হয়।
শাকিল খান বলেন, আমাদের মানসিক শান্তি থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীনদের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র। সবার সহযোগিতা ও পরামর্শ পেলে আগামীতে বৃহৎ পরিসরে তাঁদের জন্য কাজ করব।
এই কাজের অন্যতম উদ্যোক্তা ডেন্টিস্ট রেজোয়ানুল হক রাব্বী বলেন, আমাদের মত মানসিক ভারসাম্যহীনরাও সমাজের অংশ। সবার মত তাঁদেরও বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে এইজন্য সাধ্যমত পাশে থাকার চেষ্টা করছি। তাই মানসিকভাবে ভারসাম্যহীনদের গোসল করানো ও পোশাক প্রদান করতেছি। এই কাজে সহায়তা করা স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আগামীতেও এই কাজ অব্যাহত থাকবে।
তাঁদের এই কাজের প্রশংসা করে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক আহমেদ বলেন, সমাজের যেকোনো ইতিবাচক পরিবর্তনে যুব সমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এমন ইতিবাচক কাজে উপজেলা প্রশাসন সবসময় পাশে থাকবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।