ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
তীব্র শীতে কাঁপছে ঈশ্বরদীসহ আশেপাশের এলাকা। কয়েকদিন ধরেই বিরাজ করছে হাড় কাঁপানো শীত। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) ঈশ্বরদীর তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আগেরদিন বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা নেমে ১০ ডিগ্রীতে দাঁড়ায়। এরআগে কয়েকদিন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রীর মধ্যে ওঠানামা করছিল। তাপমাত্রা নেমে যাওয়ার পাশাপাশি উত্তরের হিমেল হাওয়ায় অস্বাভাবিক শীতে ছেদ পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। কয়েক দিন ধরে তীব্র শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এরইমধ্যে ডায়ারিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু-বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ।
প্রতিদিনই বাড়ছে জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এতে ওষুধের দোকান, কমিউনিটি ক্লিনিক, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাড়ছে রোগীর ভিড়। আবার কেউ ছুটছেন বেসরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের কাছে। ঠান্ডাজনিত রোগ এআরআই বা শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ এবং ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে জানা গেছে, গেল সপ্তাহে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। আর এতে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া। তবে শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে, আগের চেয়ে বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন শতাধিক রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের বেশির ভাগই জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। যাঁরা বেশি আক্রান্ত তাঁদের হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ বয়োজ্যেষ্ঠরা। বিশেষ করে সন্ধ্যা ও ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার সঙ্গে ঠান্ডা বাতাসের কারণে এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরা। ফলে ওষুধের দোকান, কমিউনিটি ক্লিনিক কিংবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে ছুটছেন অনেকে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী এহসান জানান, শীত মৌসুমে ঠান্ডাজনিত কারণে জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিনই ঠান্ডা, জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত অনেকে চিকিৎসা নিতে আসছেন। এসব রোগীর মধ্যে চার বছর থেকে দেড়-দুই বছরের শিশুর সংখ্যাই বেশি। তবে এদের মধ্যে এক বছরের নিচে যে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে, তারা ঝুঁকিতে রয়েছে। শীতে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে ভালোভাবে চিকিৎসা এবং নিয়মিত সেবাযত্ন পেলে পাঁচ-সাত দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠবে।
তিনি আরো বলেন, শিশু কিংবা বয়োজ্যেষ্ঠদের সবসময় গরম কাপড় পরে থাকতে হবে। ঠান্ডার কারণে যদি কেউ ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। তাহলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ##