ঐক্যবদ্ধ না হলে পরাশক্তিরা মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাবে: আজহারী

ভেদাভেদ ভুলে দেশের কল্যাণে জাতীয় ঐক্যের আহবান জানিয়েছেন ইসলামি আলোচক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। তিনি বলেন, ‘একে অপরকে কাফের ফতুয়া দিয়ে নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য না করি। ঐক্যবদ্ধ না হলে পরাশক্তিরা আমাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাবে।’

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে কক্সবাজারের পেকুয়ায় মরহুম মাওলানা শহিদ উল্লাহ স্মৃতি সংসদ ও সমাজ উন্নয়ন পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান মুফাসসিরের বয়ানে তিনি এসব কথা বলেছেন। কক্সবাজারের এ মাহফিলে রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত ১১ পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা বয়ান করেন জনপ্রিয় ইসলামি এই আলোচক।

এ সময় আজহারী বলেন, ‘ঐক্যের বিকল্প নেই। কিছু দিন আগে আমাদের লিডার ড. ইউনূস জাতীয় ঐক্যের জন্য সব দলকে ডেকেছেন। ওনার কথায় আমাদের ঐক্য হতে হবে। প্রয়োজনে অন্য ধর্মের সাথেও ঐক্য হওয়া দরকার, না হয় বিপদ আছে। নিজেদের মাঝে মারামারি-মনোমালিন্য করা যাবে না।’

আজহারির বয়ানে আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। মাহফিলের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় শুক্রবার সকাল ১০টায় আর শেষ হয় আজাহারীর বয়ানের মধ্য দিয়ে।

১ম অধিবেশনে অধ্যক্ষ মাওলানা বদিউল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা পেশ করেন শায়খ মুফতী ইব্রাহিম, মাওলানা আবদুল্লাহ আল আমীন, মাওলানা আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ ও কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী। দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলা জামায়তের আমীর অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী সভাপতিত্বে বয়ান করেন মাওলানা সাদিকুল রহমান আজহারী, শায়খ সালাহ উদ্দিন মাক্কী ও ড. মিজানুর রহমান আজহারী প্রমুখ।

এর আগে আজহারী আসার খবরে শুক্রবার সকাল থেকে পেকুয়ার সাবেকগুলদির মাহফিল মাঠে মানুষের ঢল নামে। বিকেলে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে মাঠ। তাফসিরকে কেন্দ্র করে ময়দান ও আশপাশে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আয়োজক কমিটি ও প্রশাসন। বিকেলে একটি হেলিকপ্টারে করে পেকুয়ায় পৌঁছান আজহারি। তাকে একনজর দেখতে সববয়সী মানুষের ভিড় লেগে যায়। হেলিপ্যাড থেকে মাহফিল মাঠ পর্যন্ত লালগালিচা বিছিয়ে আজহারীকে বরণ করা হয়।

পেকুয়া সমাজ উন্নয়ন পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা নিয়ামত উল্লাহ নিজামী জানান, ড. আজহারীসহ জনপ্রিয় ইসলামি আলোচকদের আগমনে ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল নামে পেকুয়ার প্রত্যন্তঞ্চলে। প্রায় দুই ঘণ্টা বয়ান করেন আজহারী। বুধবার রাত থেকে বিভিন্নস্থানের কয়েকশ’ ইউটিউবার ক্যামেরা নিয়ে মাহফিল মাঠে জড়ো হন। বয়ান চলাকালে অনেকে সরাসরি লাইভ প্রচার করেন।

পেকুয়া থানার ওসি মো. সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক ড. আজহারীর বয়ান শেষ হয় রাত প্রায় ১১টার দিকে। এ সময় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় চারপাশে সজাগ দৃষ্টি রাখে যৌথ বাহিনী। মুসল্লিরা সমাবেশের মাঠ ত্যাগ না করা পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনী মাহফিল মাঠ ও সড়কে টহল সচল রাখা হয়। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই স্মরণকালের বিশাল মাহফিল সম্পন্ন হয়েছে।’