বান্দার দোয়া-জিকিরে আল্লাহ তাআলা খুশি হন। যারা দু’হাত তুলে দোয়া করেন এবং সবসময় আল্লাহর জিকিরে রত থাকেন, মহান আল্লাহর কাছে তাদের মর্যাদা আলাদা। সাধারণত দোয়ার নির্দিষ্ট সময় নেই।
বিখ্যাত তাবেয়ি আতা ইবনে আবি রাবাহ (রহ) বলেন, যখন ادْعُوْنِیْۤ اَسْتَجِبْ لَكُم ‘আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেবো’ আয়াতটি নাজিল হয় তখন নবীজি (স.)-কে লোকেরা জিজ্ঞাসা করল যে, আমরা কোন সময়টাতে দোয়া করব তা জানলে ভালো হতো। তখন সুরা বাকারার এই আয়াতটি নাজিল হয়— وَ اِذَا سَاَلَکَ عِبَادِیۡ عَنِّیۡ فَاِنِّیۡ قَرِیۡبٌ ؕ اُجِیۡبُ دَعۡوَۃَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ ۙ فَلۡیَسۡتَجِیۡبُوۡا لِیۡ وَ لۡیُؤۡمِنُوۡا بِیۡ لَعَلَّهُمۡ یَرۡشُدُوۡنَ অর্থ: আর যখন আমার বান্দাগণ তোমাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে, আমি তো নিশ্চয় নিকটবর্তী। আমি আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক। যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে। (সুরা বাকারা: ১৮৬)
এ থেকে বোঝা যায়, দিনে-রাতে যে কোনো সময় দোয়া করা যাবে। তবে আছর থেকে মাগরিবের মধ্যবর্তী সময় অর্থাৎ সন্ধ্যাবেলায় বিশেষভাবে আল্লাহর দিকে মনোযোগী হয়ে তাসবিহ-তাহলিল, জিকির ও দোয়াতে মাশগুল থাকা উত্তম। একাধিক আয়াত ও হাদিসে এর সত্যতা প্রমাণিত।
পবিত্র কোরআনের এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘আর আপনি নিজেকে তাদের সঙ্গে সংযুক্ত রাখুন যারা তাদের রবকে সকাল ও সন্ধ্যায় তার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ডাকে।’ (সুরা কাহাফ: ২৮)
হজরত আবু উমামা (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ফজরের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত আল্লাহর জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল ও তাকবির-তাহমিদ করা আমার নিকট ইসমাঈল (আ.)-এর বংশধর থেকে দুই বা ততোধিক গোলাম আজাদ করার চেয়ে অধিক প্রিয় এবং আছরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত (এমন করাটা) ইসমাঈল (আ.)-এর বংশধর থেকে চারজন গোলাম আজাদ করা অপেক্ষা অধিক প্রিয়। (আলমুজামুল কাবির তাবারানি: ৮০২৮; মুসনাদে আহমদ: ২২১৮৫; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১০/১৩২)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সকাল-সন্ধ্যায় বেশি বেশি দোয়া-জিকির করার তাওফিক দান করুন। আমিন।