ঈদের কেনাকাটা হল না বেসরকারি শিক্ষকদের

হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ
চাকরির বেতনে চলে সংসার ও ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ এমনকি ঈদের কেনাকাটা। ইএফটির (ইলেকটনিক্স ফান্ড ট্রান্সফার) নিয়মের বেড়াজালে আটকে পড়ে শেষ মহুত্বে এসে ঈদ বোনাস ও বেতন ছাড় করে শিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু বৃহস্পতিবার ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টাকা উত্তোলন করতে পারছেন শিক্ষক-কর্মচারীগণ। সংসার চালানো ও পরিজনদের ঈদের কেনাকাটা করতে না পারায় ঈদ আনন্দ হতে বঞ্চিত তারা বলেন জরমনদী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. ফিরোজ কবির জানান, চলতি রমজান মাসে বাজার খরচ ও পরিজনদের নিত্য প্রয়োজনীয় ঈদের কেনাকাটা করা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষকতা পেশায় চাকরি করে বলতে হচ্ছে বেতন ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন ও ঈদ আনন্দ হতে বঞ্চিত। কে শুনে কার কথা!
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসসূত্রে জানা গেছে, গেল বছরের ডিসেম্বর মাস হতে ইএফটির মাধ্যমে বেসরকারি কলেজ, স্কুল ও কারিগরি স্কুল এবং কলেজের বেতন ভাতা প্রদান শুরু হয়েছে। মাদ্রাসার বেতন ভাতা এখনো এমপিও এর মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে। উপজেলায় ১২টি কলেজ, ৯১টি স্কুল ও কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে। শেষ মহুর্ত্বে এসে বেতন ভাতা ছাড় করলেও ব্যাংক হতে টাকা উত্তোলন করা সম্ভাব হচ্ছে না।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান স্বাক্ষরিত গত ১২/২/২০২৫ তারিখের একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, যাদের এমপিও শীটের সাথে জাতীয় পরিচয় পত্র এবং ব্যাংক হিসেবের অমিল রয়েছে তাদের ভূল সংশোধন না করা পয়ন্ত বেতন ভাতা ইএফটিতে প্রেরণ করা সম্ভব হবে না। আগামি ৬/৩/২০২৫ তারিখের মধ্যে ২৭/১০/২০২২২ তারিখের পরিপত্র মোতাবেক অনলাইনে আবেদন করে ভূল তথ্যাদি সংশোধন করতে হবে। এরই আলোকে শিক্ষক-কর্মচারীগণ তাদের যাবতীয় তথ্য সংশোধনের করে পাঠিয়ে দন। কিন্তু এরপরও যথাসময়ে বেতন-ভাতা পেল না শিক্ষক কর্মচারীগণ। সে কারনে ঈদের কেনাকাটা হতে বঞ্চিত।
উপজেলার ঝিনিয়া এম.এ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল খালেক প্রথম ধাপ হতে ষষ্ঠ ধাপ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে শিক্ষক-কর্মচারীগণের বেতন-ভাতা ইএফটি ড্যাসবোর্ডে আপলোড কররেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬০ ভাগ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা ব্যাংকে জমা হয়নি। সেই সাথে যাদের বেতন ভাতা ব্যাংকে জমা হয়েছে, তাদের মধ্যে হতে বেশিভাগ শিক্ষক-কর্মচারী টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। বৃহস্পতিবার হতে ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টাকা উত্তোলন সম্ভাব হচ্ছে না। তাই ঈদ আনন্দ হতে বঞ্চিত অনেকে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা অধিদপ্তরের সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় শিক্ষক-কমচারীগণ চরমভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। শেষ মহুত্বে এসে বেতন-ভাতা ছাড় করলেও ব্যাংকে টাকা জমা হয়নি। সে কারনে অনেকে ঈদ কেনাকাটা করতে পারছেন না।
সুন্দরগঞ্জ সোনালী ব্যাংক পিএরসি শাখার ব্যাবস্থাপক মো. আব্দুল হাদী বলেন, যাদের বেতন-ভাতা ব্যাংকে এসেছে, রাত হলেও তাদের টাকা প্রদান করা হবে।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তার সাথে বহুবার যোগাযোগ করে তাদের মতামত নেয়া সম্ভব হয়নি।

preload imagepreload image