২৮ জানুয়ারি থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা রানিং স্টাফদের

মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক দেওয়া এবং নিয়োগপত্রের দুই শর্ত প্রত্যাহার করা না হলে আগামী ২৮ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা।

বুধবার দুপুরে নগরীর বটতলী পুরাতন রেলস্টেশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আগামী ২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি মানার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। রানিং স্টাফদের এ সমস্যা নিয়ে গত তিন বছর ধরে নানা কর্মসূচি পালন করলেও সমাধান না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মজিবুর রহমান বলেন, বিগত ১৬০ বছর ধরে রেলওয়ের রানিং স্টাফরা মাইলেজ সুবিধা পাচ্ছিলেন। অর্থাৎ দৈনিক ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বেসিকের (মূল বেতন) হিসেবে বাড়তি অর্থ পেতেন। এছাড়া অবসরের পর বেসিকের সঙ্গে এর ৭৫ শতাংশ অর্থ যোগ করে অবসরকালীন অর্থের সঙ্গে হিসাব হতো।

তিনি বলেন, অবসরের পর মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক পেয়ে আসছেন। তবে ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর এই সুবিধা সীমিত করে অর্থ মন্ত্রণালয়। অথচ রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক যেকোনো দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে ট্রেন সচল রাখেন রানিং স্টাফরা।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা বলেন, ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল কর্মবিরতি পালন করলে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন তারা। এরপর বারবার আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দিলেও সংকটের কোনো সমাধান এখন পর্যন্ত হয়নি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকেও তিনবার সময় দেওয়া হয়েছে। বাধ্য হয়ে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিতে হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, নতুন নিয়োগ পাওয়া ট্রেনচালক, সহকারী ট্রেনচালকসহ রানিং স্টাফদের পুরোনো স্টাফদের মতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ২০২২ সালের পর নিয়োগপত্রে দুটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে।

নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীরা চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের জন্য রানিং অ্যালাউন্স ছাড়া অন্য কোনো ভাতা পাবেন না এবং মাসিক রানিং অ্যালাউন্সের পরিমাণ মূল বেতনের চেয়ে বেশি হবে না।

এছাড়া অবসরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বশেষ আহরিত মূল বেতনের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক পাবেন; যা রেলওয়ের কোনো আইন বা বিধিবিধানে উল্লেখ নেই। তারা এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পত্র এবং নতুন নিয়োগ পাওয়া রানিং স্টাফদের বৈষম্যমূলক শর্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল বারী, সহ-সভাপতি খুরশিদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর এবিএম শফিকুল আলম প্রমুখ।

preload imagepreload image